আমি ইভিএমের পক্ষে: প্রধানমন্ত্রী
৩ অক্টোবর ২০১৮ ১৮:১০
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আগামী জাতীয় নির্বাচনে সরকার ও তিনি নিজে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোট নেওয়ার পক্ষে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতিসংঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেশে ফিরে ওই অধিবেশনসহ যুক্তরাষ্ট্র সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি কিন্তু ইভিএমের পক্ষে। আজ পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থার যতটুকু পরিবর্তন বা আধুনিকায়ন, তা কিন্তু আমরা করেছি। এখন তো ডিজিটাল বাংলাদেশ। এই যে আপনি আজ টাকা পাঠাচ্ছেন মোবাইলে। এই টাকা তো সবার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস। সেই টাকা পাঠাচ্ছেন, সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে যাচ্ছে। ভোটটাও আপনার প্রিয় জিনিস। তা আপনি ভোটটাই (ডিজিটাল উপায়ে) দিতে পারবেন না কেন?
কেবল ইভিএম নয়, ভোট দেওয়ার জন্য আরও আধুনিক ব্যবস্থা তৈরির পক্ষে মত দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বরং এমন একটা ব্যবস্থা তৈরি করা উচিত যে মোবাইল থেকেও যেন আপনারা ভোট দিতে পারেন। কষ্ট করে আর যাওয়া (ভোটকেন্দ্রে) লাগবে না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চেয়েছি, আগে ইভিএমটা হোক। সেজন্য আমরা একনেকে প্রজেক্ট পাস করে দিয়েছি। যেহেতু প্রজেক্ট করে দিয়েছি, সেহেতু বুঝতেই পারেন, আমাদের মানসিকতা কী। আমরা চাই (ইভিএম)। কারণ জনগণের ওপর আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস আছে। জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। জনগণের ভোটের অধিকারটা সুরক্ষিত করা সেটা আমাদের দায়িত্ব। আর সেটা মনে করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কাজেই ইভিএমে আমার তো কোনো আপত্তি নেই। আমি চাই, ইভিএম হলে মানুষ আরও সুবিধা পাচ্ছে। টিপ দিচ্ছে, ভোট হচ্ছেচ সঙ্গে সঙ্গে গুণে গুণে রেজাল্ট পেয়ে যাচ্ছে।
‘আগেকার মতো সিল মেরে বাক্স ভরে ভরা বাক্স নিয়ে গেল বা একটা গাড়িতে করে গিয়ে ভোট দিলো বা ১০টা হোন্ডা, ২০টা গুণ্ডা নির্বাচন ঠাণ্ডা— অন্তত সেই জায়গা থেকে তো মুক্তি পাওয়া যাবে,’— বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, হ্যাঁ, আমার একটা আকাঙ্ক্ষা ছিল, একসময় অন্তত একটানা যদি দুই বার ক্ষমতায় থাকতে পারি, অন্তত উন্নয়নগুলো দৃশ্যমান হবে। মানুষ তার সুফলটা পাবে। আমার দুই টার্ম হয়ে গেছে। এখন আমার কাছে ক্ষমতা থাকলেও কী, যাই বালাইও কী! আমার আর কোনো চিন্তা নাই। এটা আমার পরিষ্কার কথা।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে আওয়ামী লীগের মুখপাত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য দুর্নীতির তথ্য রয়েছে। তার বিচারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ল’ উইল টেক ইটস ওন কোর্স।
সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ অধিবেশন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘ ও বিশ্বনেতাদের অবস্থান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, আগামী জাতীয় নির্বাচন, নির্বাচনকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক জোট গঠনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন-
‘লাগলে বলুক, আন্দোলন ছাড়া কোটা দেবো না’
‘বিশ্বসভায় বাংলাদেশের ইমেজ আরও সুদৃঢ় হয়েছে’
সবাই উইশ করেছে, আমি যেন আবার ফিরে আসি: প্রধানমন্ত্রী
নির্বাচনে আসা না আসা তাদের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত: প্রধানমন্ত্রী
‘সাংবাদিকরা উদ্বিগ্ন বুঝলাম, কিন্তু আমাদের উদ্বেগটা কে দেখবে’
‘দেশের ভোট দু’রকম, আওয়ামী লীগ আর অ্যান্টি আওয়ামী লীগ’
‘কারও সহযোগিতা দরকার হলে আমার ক্ষমতায় না থাকাই ভালো’
‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নোংরামি ঠেকাতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন’
সারাবাংলা/এটি/টিআর