অবশেষে বাড়ছে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি শিক্ষকদের বেতন-ভাতা
৪ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৩৭
।। মেসবাহ শিমুল, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: বছরের পর বছর বঞ্চনার শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের ভাগ্য পরিবর্তনের আভাস মিলেছে। ‘স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা নীতিমালা’র অধীনে বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে রয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের করা ওই নীতিমালায় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১৪০ ভাগ ও সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১৭ ভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে গত জানুয়ারিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করেন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষকরা। পরে ১৬ জানুয়ারি তারা মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের আশ্বাসে রাজপথ ছেড়ে ঘরে ফেরেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে সরকার শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব কাজ এগিয়ে রাখতে চায়। এর অংশ হিসেবে স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ, এমপিওভুক্ত প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করা হয়েছে। এখন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষকদের অধিকার নিশ্চিত করার পালা। এছাড়া এসব শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক বঞ্চনার শিকার হওয়ায় তাদের বিষয়টি নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গত এপ্রিলে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে গত মঙ্গলবার ফের অর্থ মন্ত্রণালয়ে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা স্থাপন, স্বীকৃতি, পরিচালনা, জনবল কাঠামো এবং বেতন-ভাতা-অনুদান সংক্রান্ত নীতিমালা পাঠানো হয়।
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোখলেসুর রহমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার ১৫ হাজার ২৪৩ জন শিক্ষকের মধ্যে সরকারি অনুদান পান মাত্র ৪ হাজার ৫২৯ জন শিক্ষক। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকদের দেওয়া হয় ২ হাজার ৫শ এবং নবীন শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা পান ২ হাজার ৩শ টাকা করে। তবে প্রস্তাবিত নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে প্রধান শিক্ষকরা ৬ হাজার এবং নবীন শিক্ষক ও সহকারীরা ৫ হাজার টাকা করে বেতন পাবেন।
হিসাব অনুযায়ী, দেশে ৩ হাজার ৪৩৩টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার ২৪৩ জন এবং শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ লাখেরও বেশি।
মাদরাসা সংশ্লিষ্টরা জানান, দেশে বর্তমানে দুই ধরনের ইবতেদায়ি মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে একটি দাখিল বা এর উচ্চতর মাদরাসার সঙ্গে সংযুক্ত, অন্যটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্বতন্ত্র, তবে পুরোপুরি সরকারি নয়। দাখিল মাদরাসার সঙ্গে সংযুক্তরা এমপিওভুক্ত। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকরা মাসে ১০ হাজার ৩৮৮ টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা মাসে ৯ হাজার ৯৮৮ টাকা বেতন-ভাতা পাচ্ছেন।
সারাবাংলা/এমএস/এটি