পুলিশকে আহত করার পর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের লাঠিপেটা
৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৫:৫৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে উত্তেজনার সময় ছোড়া ইটের আঘাতে এক পুলিশ সদস্যের মাথায় গুরুতর জখম হয়েছে। এরপর পুলিশ ছাত্রলীগের একাংশকে পিটিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ সারাবাংলাকে বলেন, চট্টগ্রাম কলেজের ভেতরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ মুখোমুখি হয়েছিল। এসময় তাদের ছোড়া ইটের টুকরো মাথায় পড়ে রেজাউল করিম নামে আমাদের এক কনস্টেবল আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য আমরা ক্যাম্পাসে সতর্ক ছিলাম। পরে উভয় গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কলেজ ক্যাম্পাসের কাঁঠাল তলায় ছাত্রলীগের সদ্যঘোষিত কমিটির নেতাকর্মী এবং তাদের বিরোধীরা মুখোমুখি হন। উভয়পক্ষ এসময় মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। মুখোমুখি হওয়ার পর তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তারা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হয়।
এর মধ্যে বিরোধী পক্ষের দিক থেকে ছোড়া একটি ইটের টুকরো এসে পড়ে কনস্টেবল রেজাউল করিমের মাথায়। এরপর পুলিশ কমিটি বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে। তারা দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। পরে কমিটিতে থাকা নেতাকর্মীরাও ক্যাম্পাস ছেড়ে যান।
কমিটি বিরোধী ছাত্রলীগ নেতা ওবায়দুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘উভয়পক্ষের ধাওয়ার মধ্যে একটি ইটের টুকরা একজন পুলিশ সদস্যের মাথায় পড়েছে। এটা কেউ ইচ্ছে করে মেরেছে বলে মনে হয় না। কিন্তু পুলিশ আমাদের উপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে। এতে আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।’
ওবায়দুল হক চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওরা (কমিটি বিরোধী) বহিরাগত নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিল। আমরা বিষয়টি পুলিশকে জানাই। তখন পুলিশ এসে বহিরাগতদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। এর মধ্যে ওরা একজন পুলিশের মাথা ফাটিয়ে দেয়। তখন পুলিশ তাদের উপর লাঠিচার্জ করে।’
মাহমুদুল করিম চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
দীর্ঘসময় ছাত্রশিবিরের দখলে থাকা চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ ২০১৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর দখলমুক্ত করে ছাত্রলীগ। ৩৪ বছর পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর মুক্ত হওয়া সেই কলেজে আংশিক কমিটি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ।
কমিটিতে মেয়রের অনুসারী ৬ জনকে রাখা হয়। তবে পরদিনই তারা কমিটি থেকে পদত্যাগের ঘোষণা নিয়ে এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন শুরু করে। এ নিয়ে কয়েক দফা সংঘাতের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতারা চট্টগ্রামে এসে মেয়রের সঙ্গে বৈঠক করেন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সময় মেয়রের অনুসারী সবাইকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ