সংসদে পাসের আগে শ্রম আইন সংশোধনের দাবি
৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৬:৪১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: প্রস্তাবিত শ্রম আইনে শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা হয়নি এমন উল্লেখ করে জাতীয় সংসদে আইনটি চূড়ান্তভাবে পাস হওয়ার আগে এর সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। রোববার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এ দাবি জানান।
বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মো. জাফরুল হাসান।এছাড়া বিলসের সদস্য কামরুল হাসান ‘শ্রম আইন-২০১৮, প্রাপ্তি ও উন্নয়নে করনীয়’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
গোলটেবিলে শ্রম আইনের ত্রুটি, শ্রমিক সংগঠনের উদ্বেগ এবং সরকারের করণীয় সম্পর্কে নিজের মত তুলে ধরেন বিলসের উপদেষ্টা মো. শহিদুল্লাহ চৌধুরী, আব্দুস সালাম, মেজবাহ উদ্দিন আহমদ, ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসাইন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) অ্যাকট্রাভ সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, শ্রম আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট একেএম নাসিম, জাফরুল হাসান শরীফ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহবায়ক ড. হামিদা হোসেন, আইএলও প্রতিনিধি গগণরাজ ভান্ডারি।
বিলসের উপদেষ্টা মো. শহিদুল্লাহ চৌধুরি বলেন, ‘প্রস্তাবিত শ্রম আইনটি প্রণয়নের আগে বিলসসহ অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনগুলো যে সুপারিশ করেছে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। এমনকি সরকার শ্রমিক সংগঠন গঠন, কর্মপরিবেশ, মজুরি কাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে যেসব অঙ্গিকার করেছে সেগুলোও মানেনি। আইনে শ্রমিকের যে পরিচয় দেওয়া হয়েছে তাতে প্রকৃত শ্রমিকদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এ আইনে গৃহশ্রমিক, ইপিজেড শ্রমিকসহ সব শ্রেণির শ্রমিককে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।
মেজবাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, “প্রস্তাবিত শ্রম আইনের ২৭ ধারায় শ্রমিক কর্তৃক চাকরির অবসানের ক্ষেত্রে শ্রমিকের অনুপস্থিতিজনিত কারণে শ্রমিককে ‘অব্যাহতি’ দেওয়ার স্থলে ‘ইস্তফা’ শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে শ্রমিককে বঞ্চিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
এছাড়া ৯৩ ধারায় ‘বিশ্রাম কক্ষ’ এর পরিবর্তে ‘খাবার কক্ষ’ প্রতিস্থাপন করে তাদের ন্যায়ানুগ প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
শ্রম অধিকার বিশেষজ্ঞ সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ বলেন, ‘প্রস্তাবিত শ্রম আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়াটিই প্রশ্নবিদ্ধ। সেখানে শ্রমিক সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিত্বকে ভুল বুঝিয়ে মত নেওয়া হয়েছে। এটা একপাক্ষিক আইন। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকে খুশি করতে সরকার তৃতীয় পক্ষের দ্বারা আইনটি পাস করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আগামী ২৪ তারিখে জাতীয় সংসদ বসার আগে এ নিয়ে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের সঙ্গে বসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে আইনের প্রসেসটিই (প্রক্রিয়া) ভুল সে আইন কি করে শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করতে পারে। সরকারের ইচ্ছা মাফিক কমিটি দিয়ে করা এ আইন মূলত এর মাধ্যমে সরকার শ্রমিককে বঞ্চিত করার পথ সৃষ্টি করবে।’
সারাবাংলা/এমএস/এমও