নির্বাচন জানুয়ারির ২৭ তারিখের আগেই: ওবায়দুল কাদের
৭ অক্টোবর ২০১৮ ২০:০৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নির্বাচন কমিশন আগামী জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখের আগের যেকোনো দিন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
রোববার (৭ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরার আজমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আমির কমপ্লেক্স এলাকায় আওয়ামী লীগ ঘোষিত গণসংযোগ কর্মসূচির শেষে দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কিন্তু সেটা নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার। আপনারা প্রস্তুত হোন, অক্টোবর মাসে আমরা মনোনয়ন পর্ব শুরু করে দিয়েছি। অক্টোবর মাসে কোনো অন্তবর্তীকালীন, নির্বাচনকালীন সরকার হবে না। সরকার যেটা আছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সরকারই থাকবে। তবে সরকার তখন রুটিন ওয়ার্ক করবে। সরকারের দায়িত্বে এরিয়া বদলে যাবে। মেজর দায়িত্ব থেকে সাধারণ দায়িত্ব, রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। হয়তো সাইজটা একটু ছোট হবে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে হতে পারে।’
জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে বিএনপি মহাসচিবের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘের মহাসচিব যান ঘানা, তার নামে চিঠি এলো। আমি বলি এই চিঠি কি আকাশের ঠিকানায় এলো? জাতিসংঘের মহাসচিব কি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখলেন? পরে দেখা গেল মহাসচিব নাই। একজন অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি জানালেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের নামে এই চিঠি ভুয়া।’
এ সময় উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা জাতিসংঘের মহাসচিবের নামে এ দেশের মানুষের কাছে মিথ্যাচার করে, তারা ক্ষমতায় গেলে গণতন্ত্র নিরাপদ?’ তখন সবাই ‘না, ন ‘ বলে স্লোগান দেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই, যত নালিশ, যত নাশকতার পরিকল্পনা করেন, যত সন্ত্রাস চালান কোনো কাজ হবে না। ক্ষমতার মঞ্চে পরিবর্তন চাইতে নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির খবর কী? অক্টোবর কবে হবে? আগস্ট মাসে বলে একমাসের কথা। সেপ্টেম্বর মাসে বলে এক মাসের কথা। সেপ্টেম্বর গেল, এখন বলে এক মাসের মধ্যে আন্দোলন হবে। দেশের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যাবে, বিশ্বাস করে মানুষ? বহুরূপী ব্যারিস্টারের কথা মানুষ কী বিশ্বাস করে?’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘যারা দলীয় মনোনয়নের বিরোধিতা করবেন, এবার বঙ্গবন্ধু কন্যা কাউকে ক্ষমা করবেন না। পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, শোডাউন করে যারা মনোনয়ন দাবি আদায় করবেন, নিজের পছন্দমতো প্রার্থীর পক্ষে স্লোগান দিয়ে দাবি আদায় করবেন, সেই ধারণা যারা করছেন, শোডাউনে কারো নমিনেশন হবে না। শোডাউনের নামে যারা বিশৃঙ্খলা করবে, তাদের নম্বর কাটা যাবে। কয়েকটা সংস্থা এখানে মনিটরে আছে, কারা কি করছে সব দেখছি। প্রার্থীদের বলবো, সমর্থকদের থামান। না হলে কিন্তু আপনার নম্বর কাটা যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীরা গত ৭ দিন ২৫টি সমাবেশ করেছি এই নগরীতে। হাজার হাজার জনতার ঢল, কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয় নাই। এটা একটা ভদ্র এলাকা, আমি ভেবেছিলাম উত্তরায় সুশৃঙ্খল একটা সভা হবে। আমি আবারও বলছি শেষ পর্যন্ত কর্মীদের প্রমাণ করতে হবে যে আমরা একটা সুশৃঙ্খল দল। এই ব্যানার, এই পোস্টার, এই সব বিলবোর্ড দেখে মনোনয়ন হবে না। মনোনয়ন হবে জনমতের ভিত্তিতে। শেখ হাসিনার কাছে সব প্রার্থীর আমলনামা জমা আছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সামনে আরও ২০/২৫ দিন সময় আছে। নম্বর যাদের ভালো আছে, ক্যাডারের জন্য নম্বর কিন্তু কমবে। যেই নেতা ক্যাডারের কথায় চলে ওই নেতার আমাদের দরকার নাই। মশারির মধ্যে মশারি চলবে না। ঘরের মধ্যে ঘর করলে চলবে না। ঠিকঠাক মতো চলেন, চাঁদাবাজদের, দখলদারদের প্রশ্রয় দিবেন না। চাঁদাবাজের জায়গা আওয়ামী লীগে নেই। তাফালিং করার পরিণতি ভালো নয়, তাফালিং ছাড়ো। ক্ষমতার দাপট দেখাবে না। ক্ষমতার অহংকার মানুষ পছন্দ করে না।’
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুনের সভাপতিত্বে প্রচারপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপ, ঢাকা আওয়ামী লীগের উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এমএমএইচ/এমও