।। জাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি জালিয়াতি চক্রের সদস্য সন্দেহে দুই জনকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আটককৃত জালিয়াতি চক্রের দুই ‘সদস্যে’র পাশাপাশি একজন গাড়ি চালকও রয়েছেন। সোমবার (৮ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিস সূত্রে জানা যায়, আটককৃতরা হলেন- আশিক-ই-আতাহার, সাকিব উল সাদাত ও আনোয়ার হোসেন।
এদের মধ্যে আশিক-ই-আতাহার ও সাকিব উল সাদাত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আনোয়ার হোসেন গাড়ি চালক।
সূত্র জানায়, আটককৃত ‘জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা’ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক এক শিক্ষার্থীকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ‘সি’ ইউনিটের (কলা ও মানবিকী অনুষদ) প্রথম শিফটের প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখায়। ওই ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বিষয়টি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ৪২ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান নীলকে জানায়। নীল বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইনকে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে মাহবুবুর রহমান নীল অভিভাবক সেঁজে ওই জালিয়াত চক্রের সদস্যদের সাথে প্রায় ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে প্রশ্নপত্র নেয়ার চুক্তি করেন। সে অনুযায়ী জালিয়াতি চক্রের দুই ‘সদস্য’ একটি মাইক্রোবাসে করে গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। পরে ভোর ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে গেলে মাহবুবুর রহমান নীলের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদেরকে আটক ও মারধর করেন।
পরে ৬টার দিকে তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের হাতে তুলে দেয় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তবে আটককৃতদের পাশপাশি ওই চক্রের এক ‘হোতা’ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলেও তাকে আটক করা যায়নি বলে জানা যা।
মাহবুবুর রহমান নীল বলেন, কেউ টাকা দিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন দিচ্ছে বিষয়টি শোনার পর আমি তাদেরকে ধরার জন্য টোপ দেই। এই টোপে পা দিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসে। আমরাও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম। ভোর ৫টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে আসলে তাদেরকে ধরি। পরে প্রক্টর স্যারকে ডেকে স্যারের হাতে তুলে দেই।
আশিক-ই-আতাহার ও সাকিব উল সাদাত টাকার বিনিময়ে ‘প্রশ্নপত্র’ দেয়ার চুক্তির বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে আনোয়ার হোসেন বলেছেন, তিনি উবারের গাড়ি চালক। আককৃতরা উবারে ফোন দিয়ে সাড়ে চার হাজার টাকার চুক্তিতে খিঁলগাও থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছে। তারা কি উদ্দেশ্যে এসেছে তা তিনি জানতেন না বলে জানান।
প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সার্বিক সহযোগিতায় দুইজন জালিয়াত চক্রের সদস্যকে আটক করেছি। বিকালে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের বিচার করা হবে।
সারাবাংলা/টিআই/এনএইচ