কথা রাখার সময় এখনও শেষ হয়নি: আইনমন্ত্রী
১৩ অক্টোবর ২০১৮ ১৯:৩১
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের ৯টি ধারা সংশোধনীর দাবির প্রেক্ষিতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক তার কথার ‘বরখেলাপ’ করেনি বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার কথা রাখার সময় কিন্তু এখনও শেষ হয়নি। আমি কথার বরখেলাপ করেনি।’
শনিবার (১৩ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে কসবা উপজেলা সমিতি আয়োজিত ‘গুণীজন সম্মাননা ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আগামী সোমবার মানববন্ধনের ঘোষণা দেয় সম্পাদক পরিষদ। শনিবার (১৩ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সম্পাদক পরিষদের পক্ষ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৯টি ধারা সংশোধনের দাবিতে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিষদের সদস্য দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত।
সম্পাদক পরিষদের কর্মসূচির বিষয়টি আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি। ওনারা (সম্পাদক পরিষদ) যেটা বলেছেন, আমরা যখন তাদের সঙ্গে গত ৩০ তারিখ বৈঠক করি, সেই বৈঠকে তারা বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। এ আইনের ৯টি ধারা সম্পর্কে তাদের বক্তব্য আছে বলেও জানান। সেই আলোচনায় বলেছি, এ আইনের ২১ ধারা সম্পর্কে তাদের সঙ্গে আলাপ করেই দেওয়া হয়েছে। এই ২১ ধারার ব্যাপারে আমরা কোনো কথা শুনবো না। আমি যতটুকু চোখে দেখেছি তারাও তাতে রাজি হয়েছিলেন। ২১ ধারা সম্পর্কে কথা বলবেন না।’
তিনি বলেন, ‘বাকি আটটি ধারা সম্পর্কে আমি বলেছিলাম, আইনটা যেহেতু সংসদে পাস হয়ে গেছে। এইটা নিয়ে কথা বলার আগে বা এমন কিছু করার আগে ওনাদের কথাগুলো মন্ত্রী পরিষদে উত্থাপিত করতে হবে। তো সেই কথা আমি এখনও মন্ত্রী পরিষদের উত্থাপন করিনি। আমি শুনেছি ওনারা (সম্পাদক পরিষদ) নাকি বলেছেন আমরা কথা রাখিনি। আমার কথা রাখার সময় কিন্তু এখনো শেষ হয়নি। আমি ওনাদের এইটুকু বলতে পারবো আমি কথার বরখেলাপ করেনি। কারণ আমার সময় শেষ হয়নি।’
এর আগে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল সম্পাদক পরিষদ। তারও আগে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সম্পাদক পরিষদকে আলোচনায় অংশ নিয়ে কর্মসূচি স্থগিতের অনুরোধ জানান। পরে সরকারের তিন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে সম্পাদক পরিষদের বৈঠকে বলা হয়, আইনটি নিয়ে সম্পাদকদের আপত্তি মন্ত্রিসভায় আলোচনা করা হবে। এরপর মন্ত্রিসভার দুইটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে সম্পাদক পরিষদের আপত্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সে কারণেই ফের মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে শ্যামল দত্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে ধারাগুলো নিয়ে সম্পাদক পরিষদের আপত্তি রয়েছে, সেগুলো তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এই আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারাগুলো গণতান্ত্রিক অধিকার, সুশাসন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিপন্থী।’ আগামী ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া চলতি দশম জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনে এই ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সারাবাংলা/এজেডকে/এমও