নির্বাচন অনুষ্ঠানে ৭০০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন
১৫ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৩০
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ধারিত ৭০০ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার (১৫ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত কমিশনের ৩৬তম সভায় এই বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে ব্রিফিংয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এসময় তিনি জানান, ৩০ অক্টোবরের পর যেকোনো দিন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে তার আগে আরেকটি কমিশন সভা হবে। সেখানে তফসিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
ইসি সচিব বলেন, এরই মধ্যে ৩০০ আসনের ভোটার তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রতিটি আসনের জন্য ভোটার তালিকার সিডি তৈরি করে ইসির অঞ্চলিক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভোটর তালিকায় কোনো ভুলভ্রান্তি থাকলে তা আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনকে অবহিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার আগে যেন ভুল-ভ্রান্তিহীন ভোটার তালিকা তৈরি করা যায়।
হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের জন্য বেশিরভাগ নির্বাচনী সামগ্রী কেনা হয়ে গেছে। এগুলো গুদামজাত করা হয়েছে। বাকিগুলো আমরা শিগগরিই হাতে পাব। ইসি সচিব বলেন, জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণ চূড়ান্ত হয়েছে। তবে বর্তমানে ১০টি আসনের সীমানা নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। এগুলো নিয়ে কমিশন সভায় আলোচনা করা হয়েছে। এবার ভোটগ্রহণের জন্য ৪০ হাজার ১৯৯টি ভোটকেন্দ্র প্রাথমিক পর্যায়ে চূড়ান্ত করা হয়েছে। তফসিলের পর গেজেট প্রকাশ করা হবে। তবে নির্ধারিত কেন্দ্রের বাইরে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ কেন্দ্র চিহ্নিত করে রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে ইসি সচিব বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে দেশি-বিদেশ পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ করে সার্কভুক্ত দেশগুলোকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা হয়েছে।’
হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, এবার সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের পর কেন্দ্রীয়ভাবে ফলাফল সংগ্রহ ও ঘোষণা করা হবে। বিভিন্ন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ফল সংগ্রহ করব। একইসঙ্গে অনলাইনে কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করব, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ফল পেতে পারি। পরে কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় যেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়, সেজন্য জনপ্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার পদটি যেন খালি না থাকে, সেজন্যও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিব বলেন, কেন্দ্রীয়ভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সভা হবে। এছাড়াও নির্বাচনের আগে আটটি বিভাগীয় জেলা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটিসহ মোট ১০টি জেলায় সভা করা হবে। সেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অনান্য কমিশনাররা যাবেন। তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে। যদি আরপিও সংশোধন অনুমোদন হয়, তাহলে আমরা ইভিএম ব্যবহার করব। আর যদি না হয়, তাহলে আমরা করব না।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের সভা বর্জন প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, ‘উনি একটি বিষয় সভার এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছিলেন, কিন্তু বাকি তিন কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার সে বিষয়ে একমত হননি। এ কারণে তিনি সভা বর্জন করেছেন।’
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ইসির সংলাপের কোনো বিষয় নিয়ে পরে ইসির কমিশন সভায় আলোচনা না হওয়া প্রসঙ্গে ইসি সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে যেসব বিষয় উঠে এসেছে, সেগুলো আমরা সমন্বয় করে বই আকারে প্রকাশ করেছি। সংবিধান অনুযায়ীই কমিশন কাজ করছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ভোটার তালিকা, ভোটকেন্দ্র এবং অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
সংলাপে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সেনা মোতায়েন ও ইভিএম বাতিল চেয়েছিল এবং সরকারি দল ইভিএমের পক্ষে ও সেনা মোতায়েনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এ অবস্থায় ইসি সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সেনা মোতায়েনের বিষয়ে তফসিল ঘোষণার পর সিদ্ধান্ত হবে।
সারাবাংলা/জিএস/এমও/টিআর
৭০০ কোটি টাকার বাজেট একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতীয় সংসদ নির্বাচন