মহা অষ্টমী ও কুমারীপূজা আজ
১৭ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:১৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: শারদীয় দুর্গাপূজার সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ দিন মহা অষ্টমী। এদিনের অন্যতম আকর্ষণ কুমারীপূজা। দেবীর সন্ধ্যাপূজা আর রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে কুমারি পূজার মধ্যদিয়ে সনাতম ধর্মবলম্বীরা দিনটি পালন করবেন। মহিষাসুরমর্দিনী দেবী দুর্গা সব অশুভ শক্তি বিনাশের প্রতীকরূপে পুজিত। ভক্ত-পূজারিরা সকাল থেকেই মণ্ডপগুলোতে সমবেত হন।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীতে হেমন্তের সকালটা জেগে উঠে ঢাক বাদ্যের তালে। রামকৃষ্ণ মিশনগুলোতে কুমারী পূজার মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। কুমারী বালিকার মধ্যে শুদ্ধ নারীর রূপ চিন্তা করে তাকে দেবী মনে পূজা করবে ভক্তরা।
হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, সাধারণত এক থেকে ১৩ বছরের অজাতপুষ্প সুলক্ষণা কুমারীকে পূজায় উল্লেখ রয়েছে। ব্রাহ্মণ অবিবাহিত কন্যা অথবা অন্য গোত্রের অবিবাহিত কন্যাকেও পূজা করার বিধান রয়েছে। বয়সভেদে কুমারীর নাম হয় ভিন্ন। শাস্ত্রমতে এক বছর বয়সে সন্ধ্যা, দুইয়ে সরস্বতী, তিনে ত্রিধামূর্তি, চারে কালিকা, পাঁচে সুভগা, ছয়ে উমা, সাতে মালিনী, আটে কুঞ্জিকা, নয়ে অপরাজিতা, দশে কালসর্ন্ধভা, এগারোয় রুদ্রানী, বারোয় ভৈরবী, তেরোয় মহালক্ষ্মী, চৌদ্দয় পীঠনায়িকা, পনেরোয় ক্ষেত্রজ্ঞ এবং ষোল বছরে আম্বিকা বলা হয়ে থাকে। এদিন নির্বাচিত কুমারীকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে ঘাটে বসানো হয়।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী ধ্রুবেশানন্দ বলেন, সকাল ৬৭টা ৩০মিনিটে অষ্টমী পূজা আরম্ভ হয়। পুষ্পাঞ্জলি শুরু হয় দুপুর ১২টায়। তিনি বলেন, পূজার উদ্দেশ্য- সব মানুষের কল্যাণ কামনা করা। সব ধর্মের, সব জাতির, সব বর্ণের মানুষের সুখ-শান্তি কামনা করা। আজ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে সকাল ১১টায় কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন- পুলিশ, র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর নিরাপত্তাকর্মীরা সার্বক্ষণিক পূজামণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। আশা করছি, সবার সহযোগিতায় সব কটি অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে পারব।
সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর সব পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই ভক্ত-পূজারিরা দলে দলে আসতে শুরু করেন। রামকৃষ্ণ মঠ প্রাঙ্গণে সকাল ৬টা থেকেই শত শত দর্শক ভক্তবৃন্দ উপস্থিত হন। ৬টা ২৫ মিনিটে পূজা শুরু হয়।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল কুমার রায় বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের মধ্য দিয়ে মানবজাতির এই শাশ্বত সংগ্রামের বার্তাই ঘোষিত হয়। দেবী দুর্গা মাতৃস্বরূপা, শক্তিরূপিনী। অসুর নিধন করে তিনি শুভবুদ্ধির পথ দেখান।
তিনি বলেন, বুধবার মহা অষ্টমী পূজা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মহানবমী। শুক্রবার সকালে দশমী বিহিত পূজা ও দর্পণ বিসর্জনে শেষ হবে দুর্গোৎসব। পূজা উপলক্ষে অতিথি আপ্যায়ন, প্রসাদ বিতরণ, গরিব-দুঃখী মানুষের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। এ ছাড়া আলোকসজ্জা, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে মঙ্গলবার সপ্তমীর রাতে দেখা গেছে হিন্দু প্রধান এলাকাগুলোয় উৎসবমুখর পরিবেশ। মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি কবি-কীর্ত্তন গানের আয়োজন ছিল প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত।
সারাবাংলা/এমএস/এমআই