স্থায়ী ৭ আঞ্চলিক কার্যালয় পাচ্ছে বিপিএসসি
১৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৯:২২
।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানী ঢাকায় সচিবালয়ের মূল কার্যালয়ের পাশাপাশি সাতটি বিভাগীয় শহরেও আঞ্চলিক কার্যালয় নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিপিএসসি)। তবে ভাড়া করা অস্থায়ী বাড়িতে সীমিত পরিসরে কাজ চালাতে হচ্ছে এসব আঞ্চলিক কার্যালয়ে। সে কারণেই পূর্ণ সক্ষমতায় কর্ম কমিশনের কাজ চালাতে সাতটি বিভাগীয় শহরে স্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
‘সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক এই প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয়। এটি বাস্তবায়িত হলে ডিজিটাল ডাটাবেজের উন্নয়ন ও বিপিএসসি সচিবালয়ের জনবলের সক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একনেকের মঙ্গলবারের (২৩ অক্টোবর) বৈঠকে ১২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হচ্ছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২২ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয় ও গণপূর্ত অধিদফতর।
সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। এই কমিশনের প্রশাসনিক কাজ সম্পাদনের জন্য ১৯৮৯ সালে সরকারের একটি বিভাগের মর্যাদায় বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন সচিবালয় গঠিত হয়। রাজধানী শহর ঢাকায় অবস্থিত বিপিএসসি সচিবালয়ের মূল কার্যালয়ের বাইরে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগে রয়েছে এর সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয়। বর্তমানে সীমিত পরিসরে এবং ভাড়া করা অস্থায়ী বাড়িতে এসব আঞ্চলিক কার্যালয়ের কাজ পরিচালিত হচ্ছে। তবে আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর কাজের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য বর্ধিত জনবল কাঠামোর একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। এই পর্যায়ে বিপিএসসি সচিবালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর স্থায়ী অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
বিপিএসসি সূত্র বলছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) বিভিন্ন ক্যাডার পদে এবং সংশ্লিষ্ট নন-ক্যাডার পদে যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থীদের নিয়োগের জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিপিএসসি’র একটি প্রধান দায়িত্ব। কাজেই বিপিএসসি অধীন নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা আরও উপযুক্ত, দক্ষ, স্বচ্ছ, দ্রুত ও নিরপেক্ষ হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য নিয়োগ পরীক্ষা এবং ফল প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি আধুনিকীকরণ প্রয়োজন। তাছাড়া, বিপিএসসি সচিবালয়ের জনবলের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বর্তমানে স্থানীয় ও বৈদেশিক প্রশিক্ষণের সুযোগ একেবারেই সীমিত। বিপিএসসি সচিবালয়ের আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোর স্থায়ী অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা, বিপিএসসির আওতাভুক্ত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা ও ডাটাবেজ উন্নীতকরণ, জনবলের সক্ষমতা বাড়ানোসহ সংশ্লিষ্ট কাজের জন্য একটি বিনিয়োগ প্রকল্প গ্রহণ করতে একটি সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রমগুলোর মধ্যে রয়েছে— ৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন; সাতটি তিন তলা পর্যন্ত আঞ্চলিক কার্যালয় নির্মাণ; অফিস সরঞ্জাম, কম্পিউটার, সফটওয়্যার, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জাম সংগ্রহ; তিনটি যানবাহন কেনা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের জনবল নিয়োগ।
এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সদস্য মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে একনেকের জন্য তৈরি সার-সংক্ষেপে বলেন, প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) সচিবালয়ের সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয়ের জন্য স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে এবং বিপিএসসির আওতাভুক্ত নিয়োগ পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা ও ডিজিটাল ডাটাবেজ উন্নীত করা হবে। যার ফলে বিপিএসসির প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়বে এবং সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় আরও স্বচ্ছতা আনা সম্ভব হবে।
সারাবাংলা/জেজে/এসআই/টিআর