শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে দাবি আদায় করা হবে: মির্জা ফখরুল
২৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:৫৩
।। আসাদ জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
সিলেট থেকে: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সব দাবি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো যৌক্তিক। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবি আদায় করব।
আরও পড়ুন- ‘খালেদাকে মেরে ফেলার ব্যবস্থা করেছেন হাসিনা’
বুধবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের পরিষ্কার দাবি— নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে, তফসিলের আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে, ইভিএম ব্যাবহার করা যাবে না এবং খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।’
আরও পড়ুন- ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে ‘জয় বাংলা’য় শেষ সুলতান মনসুরের
‘আমরা কোনো অশান্তি চাই না। সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবি আদায় করব,’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এর আগে, সমাবেশে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি রেখে মাত্র দুই কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় দেশের সবচেয়ে বড় দলের নেত্রীকে কারাগারে রাখা হয়েছে। একটি স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে তাকে বিনা চিকিৎসায় রেখে দেওয়া হয়েছিল। তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও পছন্দের চিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। মূলত বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন- বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানাতে চান ডা. জাফরুল্লাহ
সমাবেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতা সুলতান মো. মনসুর বলেন, রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকতে পারে, মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু মিথ্যা মামলায় বড় একটি রাজনৈতিক দলের নেতা খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখা হয়েছে। এটা আমরা মানি না। তাকে মুক্তি দিতে হবে। পরে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ বলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করেন তিনি।
এর আগে, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা ১৫ আগস্ট চাই না, ২১ আগস্টের পুনরাবৃত্তি চাই না, জিয়াউর রহমানের মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা শান্তির বাংলাদেশ চাই তাই আগামী ৪ নভেম্বর বনানী কবরস্থানে গিয়ে ১৯৭৫-এর শহীদদের কবর জিয়ারত করে সংসদ ভবন এলাকায় জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারত করতে চাই। সেখান থেকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিককৃতিতেও শ্রদ্ধা জানাতে চাই। এটা আমার প্রস্তাব।
আরও পড়ুন- আ. লীগকে একঘরে করার হুমকি ড. মঈনের
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, আওয়ামী লীগ নাকি লাখ-কোটি টাকার উন্নয়ন করেছে। তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে তাদের সমস্যা কোথায়? আওয়ামী লীগকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ার মাধ্যমে তাদেরকে একঘরে করে ফেলব।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘সৌদি আরব থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ছাল-বাকল দিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। আমরা বলতে চাই, দ্রুত পদত্যাগ করুন। নইলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টের পাবেন। জনগণের দাবি মেনে না নিলে আপনাদের ছাল-বাকলও থাকবে না।
আরও পড়ুন- ‘জনগণের দাবি মেনে না নিলে ছাল-বাকলও থাকবে না’
সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ইনাম আহমেদ চৌধুরী, মো. শাহজাহান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আমান উল্লাহ আমান, বরকতউল্লাহ বুলু, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিব, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামার হায়দার, খেলাফত মজলিশের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, এলডিপির মহাসচিব ডা. রেদোয়ান আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়কারী শহীদুল্লাহ কায়সার, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমীন, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, জেএসডির নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনসহ অন্যরা।
আরও পড়ুন- ছোট মাঠে ঐক্যফ্রন্টের ‘বড়’ সমাবেশ
সমাবেশে উপস্থিত আছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুলতান মো. মনসুরসহ অন্যরা।
ছবি: হাবীবুর রহমান
সারাবাংলা/এজেড/টিআর
ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর