‘কোনো রাজনৈতিক দলকে দাওয়াত দিয়ে নির্বাচনে আনা হবে না’
২৫ অক্টোবর ২০১৮ ২১:২৭
গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: রাজনৈতিক দলগুলোকে দাওয়াত দিয়ে নির্বাচনে আনা হবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. রফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া হয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য। এ ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে তাদেরকে দাওয়াত দিয়ে আনা হবে না।’
বৃহস্পতিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ইসি কমিশনার রফিকুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সারাবাংলাকে এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেওয়া, না নেওয়া জন্য ইসির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নতুন কোন সংলাপ করা হবে না। নিবন্ধিত কোনো দল নির্বাচনে না এলে আমাদের কিছু করার নেই।’
ইসি কমিশনার বলেন, ‘যে নির্বাচনের মাধ্যমে (১৯৭০ সালের নির্বাচন) বাংলাদেশের জন্ম হয় সেই নির্বাচনেও সব দল অংশ নেয়নি। শুধু তাই নয় বাংলাদেশের সব সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ নিয়েছে সেটাও বলা যাবে না। ফলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য কমিশন কোনো দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে না।’
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার পর আইন অনুযায়ী নির্বাচর সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে কমিশন সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আগামী ১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎতের পর কমিশন সভা শেষে তফসিল ঘোষণা করা হবে। আগামী ৪ নভেম্বর কমিশন সভার একটি সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা আছে। ইসির কমিশন সভায় তফসিল নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।’
তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার দিন থেকে পরবর্তী ৪৫ থেকে ৪৮ দিনের মধ্যে সংসদ নির্বাচন করা হবে। আর এই ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার দিন থেকে নির্বাচনের জন্য কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় দেওয়া হবে, তবে তা ৪৮ দিনের বেশিও হবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে ইসি কমিশনার বলেন, ‘নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পরেও যদি যৌক্তিক কোনো কারণ আসে তখন আমরা তফসিলও পুনঃবিবেচনা করতে পারি, যদি না তিন মাসের টাইম ফ্রেমের মধ্যে হয়।’
বিগত সিটি করপোরেশর নির্বাচনের সময় অনেক এলাকায় পুলিশ ইসির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে, সংসদ নির্বাচনে যাতে এরকম কোনো পরিস্থিতি না হয় সে জন্য ইসি কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না সারাবাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশ কথা শোনে না তা সঠিক নয়। আমি রংপুর সিটি করপোরেশন, কুড়িগ্রামের উপ-নির্বাচন এবং সিলেট সিটি নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম। ওইসব নির্বাচনে পুলিশ কথা শোনেনি, এমন ঘটনা ঘটেনি। তাই সংসদ নির্বাচনে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার কিছু নেই। প্রচলিত আইন অনুযায়ী ইসি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’
নির্বাচনকালীন বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার হয়রানি না করতে কোনো নির্দেশনা থাকবে কি না সারাবাংলার এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি কমিশনার বলেন, ‘কাউকে যদি ইয়াবা মামলায় পুলিশ আটক করে কিংবা তিন বছরের পুরনো মামলায় গ্রেফতার করে তখন কমিশনের কিছু করার নেই।’
গায়েবি মামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এগুলো আদালতের বিষয়। এ বিষয়ে কমিশনের কিছু করার এখতিয়ার নেই।’
তিনি বলেন, ‘ডিসি, এসপিরা নির্বাচন করেন না। নির্বাচন করেন জনগণ। ডিসি/এসপি নির্বাচন করলে সিলেটে বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক পাস করতে পারতেন না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচনের সময় সংসদ বহাল থাকবে। তবে সংসদ সদস্যরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। কোনো সংসদ সদস্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রচারণা চালালে তার বিরুদ্ধে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।’
নির্বাচনে পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন চলাকালীন সময়ে ভোট কেন্দ্রের ছবি ও ভিডিও করতে পারবেন না এমন একটি নীতিমালা করা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনী কেন্দ্রের ভেতরে ভোট গ্রহণের ছবি তুলতে পারবে না এবং ভিডিও করতে পারবে না, এমন প্রস্তাবনা উঠেছে। তবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’
সারাবাংলা/জিএস/একে