Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঐক্যফ্রন্ট নেতারা নির্বাচন চান কি না, সংশয় প্রধানমন্ত্রীর


২৬ অক্টোবর ২০১৮ ২১:০৯

।। স্পেশাল করেসপেন্ডন্ট।।

ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা দেশে আদৌও নির্বাচন নির্বাচন চান কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের এক যৌথ সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ সংশয় প্রকাশ করেন। সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সংসদীয় দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

তারা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশটা সুন্দরভাবে চলছে। দেশের মানুষ স্বস্তিতে আছে। এটা তাদের ভালো লাগছে না, তারা চায় একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি। তারা চায় দেশটাকে অস্থিতিশীল করতে। সদ্যগঠিত এই জোটের নেতারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন চান কী না?

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারা আদৌও নির্বাচন চান কি চায় না? সেটাই বড় কথা।’ আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের জয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ‘নিরপেক্ষ সরকারের’ অধীনে নির্বাচনের দাবির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘একটা রায় হয়েছে উচ্চ আদালতে যে, কোনো অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সেই রায় থাকা সত্ত্বেও আমাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবী থেকে শুরু করে যারা বড় বড় আইনজীবী তারা কীভাবে দাবি করে যে, আরেকটা সরকার গঠন করে নির্বাচন দিতে হবে? এই দাবিটা কেন? কীভাবে হবে?’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই রায়ের পর আমাদের সংবিধান সংশোধন করেছি। ১৯৭২ এর সংবিধানে ঠিক যেরকম ছিল, যেভাবে নির্বাচনের জন্য যা যা লেখা ছিল আমরা সেইভাবেই নিয়ে এসেছি।’

বিজ্ঞাপন

ড. কামালের নাম উল্লেখ না করে তার সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাহলে একদিকে দাবি করবে সংবিধান রচয়িতা; অপরদিকে আবার সেই সংবিধানকে লঙ্ঘন করার জন্য নির্বাচনের অন্য ফর্মুলা দেবে। অনির্বাচিত একটা সরকার গঠন করতে বলবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে বলবে। এই আবদারটা কেন? কার স্বার্থে? কীসের স্বার্থে? সেটাই আমরা বুঝতে টাই। কী কারণে তারা এটা চাইছে? তাদের যদি এত শক্তি থাকে জনগণের সঙ্গে আসবে, ভোট হবে।’

নির্বাচনে ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে সরকারবিরোধীদের আপত্তিরসহ সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ইভিএম দিতে চাই, যাতে দ্রুত মানুষ ভোট দিতে পারে। তাতেও আবার আপত্তি কীসের? সেটাও আমরা বুঝতে পারি না। ইভিএম আজকে ইন্টারন্যাশনালি ব্যবহার করে। এতে কেউ কারো ভোট চুরি করতে পারবে না। তাহলে সেখানে কী করে তারা আপত্তি জানায়? তারা নির্বাচন চায়, কি চায় না সেটাই বড়ো কথা।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলে থাকতে কথা বলা তো দূরের কথা একটা মিটিংও করতে দেয়নি। আমরা কিন্তু সকলের জন্য সভা-সমাবেশ উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কাউকে বাধা দিইনি। এখন একটা ঐক্যজোট হয়েছে। তারা মুখে বড়ো বড়ো কথা বলে আর দুর্নীতিবাজ সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া এবং সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান তাদের সঙ্গে জোট করেছে। সেই দলসহ বিএনপি জামায়াত জোটসহ ঐক্য হয়েছে। তারা বলল, আমরা নাকি তাদের মিটিং করতে দিচ্ছি না। সিলেটে তারা মিটিং করল। আগেই তারা বলে, আমাদের দিচ্ছে না। আমার যেটা মনে হয়, যে তারা চায় আমরা তাদেরকে বাধা দিই।’

আগামী নির্বাচনেও জয়ের আশাবাদ জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘জয় আমাদের হবেই। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে। জনগণের শক্তি নিয়েই আমরা ক্ষমতায় এসেছি। জনগণের ভোটেই আমরা ক্ষমতায় এসেছি। আমার জনগণের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা বিশ্বাস আছে। যে উন্নয়নের ছোঁয়া আজকে সকলের জীবনে লেগেছে, নিশ্চয় তারা সেটা ধরে রাখবে এবং আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দেবে। আওয়ামী লীগের জয় হবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ইনশাল্লাহ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও আমরা উদযাপন করতে পারব। আমরা না থাকলে আর কেউ ভালোভাবে করতে পারবে না। কারণ তাদের মনে পাকিস্তান। এখনো অনেকে বলে পাকিস্তান নাকি আমাদের চেয়ে বেশি উন্নত। যারা এটা বলে তাদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। বলা উচিত পাকিস্তানে গিয়ে দেখে আসেন। পাকিস্তানের ঋণ শোধের জন্য সৌদি আরব ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। আমাদের কারো কাছে কোনো ঋণ নেই।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ আমরা করে রেখেছি, যাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকে। আর সেই গতি অব্যাহত থাকবে যদি আওয়ামী লীগ আবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে। তাহলে মানুষ সুন্দর জীবন পাবে। প্রত্যেকটা গ্রাম শহরে রূপান্তর হবে। নাগরিক সকল সুবিধা গ্রামে বসেই পাবে।’

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত বিএনপি একটি দুর্নীতিবাজ দল। দেশটাকে তারা লুটে খেয়েছিল।’

দেশের অনেকেই উন্নয়ন চোখে দেখে না বলেও মন্তব্য করেন টানা দুই মেয়াদের সরকারপ্রধান। বলেন, ‘উন্নয়ন তারা চোখে দেখে না, দেখবে না। চোখ থাকতে তারা অন্ধ।’

সারাবাংলা/এইচএ/একে

আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জাতীয়-নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর