‘সংলাপ শেষ, আলোচনা চলতে পারে’
৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:০৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা সংলাপের মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোটের সংলাপ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তবে চাইলে এর পরও ছোট পরিসরে সরকার দলীয়দের সঙ্গে বিরোধী দল ও জোটের আলোচনা চলতে পারে বলে জানান তিনি।
বুধবার (৭ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। এসময় তিনি আবারও জানান, সংলাপের ফল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানেই তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরবেন।
এর আগে, সকাল ১১টায় শুরু হওয়া এই সংলাপ শেষ হয় দুপুর ২টার কিছু পর। সংলাপে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের পক্ষে অংশ নেন ১২ জন। অন্যদিকে, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে অংশ নেন ১১ নেতা।
গণভবন সূত্রে জানা যায়, সংলাপে নির্বাচনের সময় সংসদ ভেঙে দিয়ে ১০ সদস্যের নির্দলীয় উপদেষ্টা সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট। এছাড়া, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিও সংলাপে তুলে ধরেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। আওয়ামী লীগ নেতারা সংলাপে বলেন, এসব প্রস্তাব সংবিধানসম্মত নয়।
সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, তারা সংবিধানের পরিপন্থি ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু বক্তব্য নিয়ে এসেছে। তাদের এসব বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়।
তিনি আরও বলেন, সংলাপ এখানেই শেষ। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর যদি তারা কোনো বিষয় নিয়ে আবার বসতে চান, সে ক্ষেত্রে আমাদের আপত্তি নেই।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের আরেক সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ছোটখাটো বিষয় নিয়ে আবারও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। তবে ছোট পরিসরে আরও আলোচনা হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, দুই পক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে অনড় ছিল। আমরা কোনো ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারিনি। তবে আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছি, সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ কোনো নেই। তবে ঐক্যফ্রন্ট আবারও সংলাপের দাবি জানিয়েছে বলে জানান তিনি।
১৪ দলীয় জোটের শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির চেয়ারম্যান রাশেদ খান মেনন সাংবাদিকদের বলেন, সংলাপ ভালো হয়েছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে।
এর আগে, ১ নভেম্বরের সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে তাদের সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। সংলাপ শেষে গণভবন থেকে বেরিয়ে উভয় পক্ষের নেতাদের বড় একটি অংশই গণমাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানান। তাতে একদিকে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলীয় জোট এই সংলাপকে ‘খোলামেলা’ ও ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংলাপে ‘আশাপ্রদ’ কিছু দেখেননি বলেই জানান।
দ্বিতীয় দফার বৈঠকের পরও ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের কাছ থেকে সংলাপ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যই পাওয়া গেছে। নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সংলাপ মনঃপূত হয়নি।’ সংলাপে কোনো সমঝোতা হয়েছে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো সমঝোতা হয়নি।
অন্যদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন সাংবাদিকদের বলেন, ‘সংলাপ শুধু সংলাপই।’ এর বাইরে তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুন-
আ.লীগ-ঐক্যফ্রন্ট দ্বিতীয় দফা সংলাপ শুরু
দ্বিতীয় দফা সংলাপে ‘প্রত্যাশা’ পূরণের আশাবাদ
সমাবেশ করায় ঐক্যফ্রন্টকে অভিনন্দন প্রধানমন্ত্রীর
দ্বিতীয় দফা সংলাপে আজ যাচ্ছেন ঐক্যফ্রন্টের ১১ সদস্য
সংলাপে ‘গায়েবি মামলা’র আংশিক তালিকা দিয়েছে বিএনপি
দ্বিতীয় দফার সংলাপে অংশ নিতে গণভবনে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা
সারাবাংলা/এনআর/টিআর