ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ার ভয় নিয়ে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা
১২ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:০৪
।। জাহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কুড়িগ্রাম: ক্লাস চলাকালে যে কোনো সময় মাথার ওপর ধসে পড়তে পারে দেওয়াল বা ছাদের প্লাস্টার, বৃষ্টি হলেই ক্লাসরুমে জমে পানি। এরইমধ্যে ভবটিকে ঘোষণা করা হয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু তারপরও এসবের মধ্যে লেখাপড়া করতে হচ্ছে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাককাটির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
শ্রেণিকক্ষের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ কক্ষেই চলছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম। যে কোন সময় কক্ষটির ছাদের প্লাস্টার খসে শিক্ষার্থীসহ শিক্ষকদের আহত হওয়ার আশংকা থাকলেও কক্ষ সংকটে পাঠদান পাঠদান অব্যাহত রেখেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এক বছর আগে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে। তবে নতুন ভবন তৈরি না হওয়ায় এ সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজারহাট উপজেলার নাককাটিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৯৯৩ সনে একটি অফিস কক্ষসহ চার কক্ষ বিশিষ্ঠ একটি ভবন নির্মিত হয়। প্রায় দুই বছর আগে ভবনটির একটি শ্রেণিকক্ষের বিভিন্ন অংশ ধসে পড়তে শুরু করলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই কক্ষটি পরিত্যাক্ত হিসেবে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এরপর অন্য শ্রেণিকক্ষ দু’টিরও বিভিন্ন অংশে ধসে পড়লে উপজেলা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ পুরো ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে এবং নতুন ভবন নির্মানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ক্লাসরুমেই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
কথা হয় বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী স্বপন কুমার, রবিউল ইসলাম ও শারমিন আক্তারের সঙ্গে। তরা জানায়, ক্লাস চলাকালে সবসময় ভয়ের মধ্যে থাকতে হয়। যে কোনো সময় প্লাস্টার খসে পড়তে পারে। নিজেদের জন্য নতুন ক্লাসরুমের দাবিও জানায় তারা।
বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষিকা সুলতানা পারভিন বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণী কক্ষে শিক্ষার্থীরা ক্লাশ করতে চায় না। তবু ও সেখানেই ক্লাশ করতে হচ্ছে। দেয়াল ও ছাদের প্লাস্টার খসে পরে। এছাড়া বর্ষাকালে কক্ষের ভিতর পানি জমে থাকে।’
প্রধান শিক্ষক জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, তারা এখন উপায়হীন। যে ইট দিয়ে ভবনটি তৈরি হয়েছিল সেগুলো ছিল নিম্নমানের। ফলে তার ওপর নতুন করে প্লাস্টার দেওয়া বা মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি বার বার উপজেলা শিক্ষা অফিসকে জানিয়েও লাভ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণার কথা জানান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপুর্ণ হিসেবে তালিকা করে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ আসলে নতুন ভবন নির্মাণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বন্যা সহনশীল বিনা-১১ ধানে আশায় বুক বেঁধেছেন কুড়িগ্রামের কৃষকরা
সারাবাংলা/এসএমএন