Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৃহস্পতিবারে থেকে টানা ১৫ দিন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন


১২ নভেম্বর ২০১৮ ২২:৪১

।। এমএকে জিলানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: সংকট সমাধানে আগামী বৃস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে একটানা ১৫ দিন প্রথম ব্যাচের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চলবে। প্রথম ব্যাচে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬১ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবির থেকে তাদের নিজেদের বসত ভিটা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও সোমবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সংবাদকর্মীদের এ তথ্য জানান। এর আগে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে প্রত্যাবাসন নিয়ে বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন- ফিরছে ২২৬০ রোহিঙ্গা, জানাল মিয়ানমার

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও বলেন, ‘আগামী ১৫ নভেম্বরের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রথম ব্যাচে ২ হাজার ২৬১ জন রোহিঙ্গা ১৫ দিনে মিয়ানমার ফিরে যাবে। কক্সবাজারের একাধিক শিবির থেকে প্রতিদিন দেড়শ জন করে রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে মিয়ানমারে।’

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘নৌপথে রোহিঙ্গারা মিয়ানমার ফিরে যাবে। প্রতিদিন ফিরে যাওয়ার সময় নির্ভর করবে জোয়ার-ভাটার ওপর।’

এর আগে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ সফররত জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনার। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের কাছে প্রত্যাবাসন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীও কোনো মন্ত্য করেননি।

বিজ্ঞাপন

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো. দেলোয়ার হোসেন সারাবাংলা’কে বলেন, ‘প্রত্যাবাসনের জন্য ঢাকার পক্ষ থেকে নেপিডো’কে (মিয়ানমারের রাজধানী) দুইটি তালিকা দেওয়া হয়েছে। প্রথম তালিকায় ৮ হাজার ৩২ এবং দ্বিতীয় তালিকায় ২২ হাজার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নাম হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি যে প্রত্যাবাসন শুরু হলে যেন এ প্রক্রিয়ায় ছেদ না পরে। এ জন্য আজও (১২ নভেম্বর) যাচাই-বাছাই নিয়ে নেপিডো’কে তাগাদা দিয়েছি।’

কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার বাংলাদেশকে জানিয়েছে যে প্রথম ব্যাচের ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গারা খুব বেশি সময় ক্যাম্পে থাকবে না। কেননা মিয়ানমারে তাদের বসত ভিটা বসবাসের উপযুক্ত রয়েছে, ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গারা আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বাড়িতেই উঠতে পারবে।

ঢাকাকে নেপিডো’র পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, এরই মধ্যে ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের বসবাসের জন্য ভারত সরকার ২৮৫টি বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। আর চীন সরকার এক হাজার বাড়ির কাঠামো পাঠিয়েছে, যেগুলো সংযোগ করলেই পূর্ণ বাড়িতে রূপ নেবে।

কূটনৈতিক সূত্রে আরও জানা গেছে, প্রথম ব্যাচের ২ হাজার ২৬১ জন রোহিঙ্গার মধ্যে যাচাই-বাছাই শেষে ২৩ জনের বিরুদ্ধে আপত্তি দিয়েছে মিয়ানমার।

অন্যদিকে, দুই দেশের সীমান্তের শূন্য রেখায় যেসব রোহিঙ্গা বসবাস করছে, তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার কাজও শিগগিরই শুরু হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা রেড ক্রস শূন্য রেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে সঙ্গে নিয়ে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে। শূন্য রেখায় বসবাসকারীরা তাদের আগের বসত ভিটায় সরাসরি ফেরত যাবে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচারের মুখে জীবন বাঁচাতে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামে বাংলাদেশ সীমান্তে। একে একে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নেয়। তারও আগে, একই কারণে আরও প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর

উ লুইন ও বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও মিয়ানমার রাখাইন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর