‘রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরতে চাইলে প্রত্যাবাসন আজ’
১৫ নভেম্বর ২০১৮ ১২:১৬
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
কক্সবাজার : মিয়ানমারের যেসব নাগরিক শরনার্থী হিসেবে বাংলাদেশে আছেন তাদের মধ্যে কেউ যদি স্বেচ্ছায় দেশে ফিরতে চান তাহলে তাদের বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) পাঠানো হবে।
সকালে কক্সবাজারে সাংবাদিকদের এই কথা জানিয়েছেন শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক কমিশনার মো. আবুল কালাম।
এই কর্মকর্তা বলেন, `প্রত্যাবাসনের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি আগে থেকে সম্পন্ন করা হয়েছে। ঘুমধুম এবং কেরুনতলীর প্রত্যাবাসন ঘাট দুইটি পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত রয়েছে। আজকে দিনের জন্য ঘুমধুম পয়েন্টটি ব্যবহারের সিন্ধান্ত রয়েছে। যেসব রোহিঙ্গা সেচ্ছায় প্রত্যাবাসন হতে চায় তাদেয় প্রত্যাবাসন করা হবে। প্রত্যাবাসন হতে চাওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য তিনদিনের যাবতীয় রসদপত্রসহ যাবতীয় সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে। এই প্রত্যাবাসন পক্রিয়া বাস্তবায়নে দায়িত্বরত কর্মকর্তা এবং সহকর্মীরা ওই ২২ নম্বর ক্যাম্পে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া ইউএনএইসসিআর এর হস্তক্ষেপ এর মাধ্যমেই এই পক্রিয়া চলছে। সিন্ধান্ত অনুযায়ী স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন হতে চাওয়া রোহিঙ্গাদের সম্মানের সাথে মর্যাদের সাথে প্রত্যাবাসন করা হবে।’
প্রাপ্ত তথ্যে অনুযায়ী চলতি বছরের ফেব্রুয়ারীতে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য কক্সবাজার টেকনাফের কেরুনতলী পয়েন্টে নাফ নদী হয়ে নৌপথে এবং বান্দরবনের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম স্থল পথ দিয়ে ১৫ নভেম্বর প্রথম দফায় ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬০ জন সদস্যকে প্রত্যাবাসন করা হবে।
এরই প্রেক্ষিতে নাফ নদীর তীরে কেরুনতলী ঘাটে এক লাইনে ১১টি করে ৩ লাইনে ৩৩ আধা সেমি-টিনের থাকার ঘর, চারটি শৌছাগার, চারটি টয়লেট নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্যারাবনের ভেতর দিয়ে তৈরী করা হয়েছে ১৬০ গজ লম্বা কাঠের জেটি। যেখানে ইতিমধ্যে ওই ঘরগুলোতে বিদুৎ ও পানির লাইনের কাজও শেষ হয়েছে। আর তা দেখভাল করতে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আলাদাভাবে চারটি ঘর তৈরি করা হয়েছে। একইভাবে ঘুমধুমেও করা হয়েছে।
সোমবার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ লুইন ও সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সংকট সমাধানে বৃস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) থেকে একটানা ১৫ দিন প্রথম ব্যাচের রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চলবে। প্রথম ব্যাচে ৪৮৫ পরিবারের ২ হাজার ২৬১ জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবির থেকে তাদের নিজেদের বসত ভিটা মিয়ানমারে ফিরে যাবে।
তবে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা ফেরত যাওয়া নিয়ে আতঙ্কিত। আমরা কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ও ভয় প্রত্যক্ষ করছি। তারা নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে মিয়ানমারে ফেরত যেতে বাধ্য হওয়ার ঝুঁকিতে আছে।’
শরণার্থীদের বা আশ্রিতদের জোরপূর্বক নিজ দেশে ফেরত পাঠানো ‘নন-রিফাউলমেন্ট’ নীতির পরিষ্কার লঙ্ঘন হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, এই নীতি অনুসারে, শরণার্থী বা আশ্রিতদের এমন কোন জায়গায় যেতে বাধ্য করা যাবে না যেখানে তারা নিপীড়নের শিকার হতে পারে বা যেখানে তাদের জীবন গুরুত্বর ঝুঁকিতে থাকবে।
সারাবাংলা/এসএমএন