দুর্যোগ সহনশীলতায় জাতিসংঘের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের উদ্বোধন
১৫ নভেম্বর ২০১৮ ১৭:৩৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দুর্যোগ সহনশীলতাকে আরও টেকসই ও সমন্বিত করার মাধ্যমে, মানব ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সরকার ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা যৌথভাবে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। এক কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলারের এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বাংলাদেশ সরকার, যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) ও সুইডিশ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি (সিডা)।
বৃহস্পতিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম (এনআরপি) শীর্ষক এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তিন বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে দুর্যোগ মোকাবেলায় জাতীয় সক্ষমতা বাড়াতে কৌশলগত সহায়তা দেবে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), ইউএন-ওমেন ও ইউএন-ওপিএস। এই প্রকল্পে সমাজের সব শ্রেণির মানুষ, বিশেষ করে প্রতিবন্ধি ও নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। এ সময় আরও জানানো য়, এ কর্মসূচির চারটি দিক রয়েছে— ভিন্নভাবে সক্ষম ও নারীদের সক্ষমতা বাড়ানো, দুর্যোগ ও জলবায়ু ঝুঁকিজনিত পরিকল্পনা, লিঙ্গভিত্তিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়ন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবের কারণে, বাংলাদেশ সবসময় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে। এ কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রামকে (এনআরপি) জ্ঞানভিত্তিক কর্মসূচি অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, এটি প্রতিবন্ধিতা অন্তর্ভুক্তিমূলক, জেন্ডার রেসপন্সিভ ও রিস্ক ইনফর্মড প্ল্যানিংয়ের মাধ্যমে দুর্যোগ সহনশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখবে। এই কর্মসূচি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলির সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে দেবে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আরও সহনশীল করবে বলে আশা করছেন তিনি।
সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্কের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাদের দুর্যোগ ঝুঁকি কমানোর জন্যও আহ্বান জানান ত্রাণমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামাল। আরও বক্তব্য রাখেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার, স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মাহবুব হোসাইন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আইনুল কবির।
অনুষ্ঠানের শুরুতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও এনআরপি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর মো. মোহসীন প্রকল্পের উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন।
পরে ডিএফআইডি বাংলাদেশ অফিস হিউম্যানেটারিয়ান অ্যাডভাইজার ওমর ফারুক বলেন, ডিএফআইডি মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সহনশীলতাকে মূলধারায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করে যাচ্ছে এবং এর ধারাবাহিকতায় সরকারের সঙ্গে ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রামের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
ঢাকায় নিযুক্ত সুইডিশ রাষ্ট্রদূত শারলটা স্লিটার বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে নারীদের সহায়তা প্রয়োজন। সুইডেন সরকার এ বিষয়ে সবসময় বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকবে।
বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী মিজ মিয়া সেপ্পো বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে প্রশংসা করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এটি দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগসহ উন্নয়ন অংশীদার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সারাবাংলা/এইচএ/টিআর
এনআরপি ত্রাণমন্ত্রী দুর্যোগ সহনশীলতা ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রাম