বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর মামলায় চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণ
১৯ নভেম্বর ২০১৮ ১৮:০৯
।।স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর বাসের চাপায় মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসকের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত। চিকিৎসক হিসেবে সাক্ষ্য দেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার মঞ্জুর আল মোরশেদ চৌধুরী।
সোমবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে মাত্র ১২ কার্যদিবসে ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলো। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) দিন ঠিক করা হয়েছে।
সাক্ষ্যগ্রহণকালে কারাগারে থাকা আসামি জাবালে নুরের ঘাতক বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ ও ‘হেলপার’ (সহকারী) মো. এনায়েত হোসেন ও অপর এক চালক মো. জোবায়ের সুমনকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার অপর এক আসামি জাবালে নুরের ঘাতক বাসের মালিক মো. শাহাদাত হোসেন আকন্দের বিষয়ে মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- জাবালে নূর পরিবহনের দু’টি বাসের মালিক শাহাদাত হোসেন আকন্দ ও জাহাঙ্গীর আলম, দুই চালক মাসুম বিল্লাহ ও জুবায়ের সুমন এবং দুই হেলপার এনায়েত হোসেন ও কাজী আসাদ। এদের মধ্যে শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন বাসটির চাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যায়।
আসামিদের মধ্যে কাজী আসাদ ও জাহাঙ্গীর আলম পলাতক। কারাগারে রয়েছেন বাকি চারজন। গত ৬ আগস্ট এ চার আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শাহাদাত হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমন ।
গত ৬ সেপ্টেম্বর এ মামলায় ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর কাজী শরিফুল ইসলাম ঢাকা মুখ্য মহানগর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আসামি জোবায়ের সুমন ও মাছুম বিল্লাহর হালকা যান- কার, জীপ ও মাইক্রোবাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স সঠিক থাকলেও ৪১ সিটের বাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না।
চার্জশিটে আরও বলা হয়, জব্দকৃত ৩টি বাসের কোনটিতেও কোন প্রকার যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না। বাসের চালক ও হেলপার নিয়োগের এখতিয়ার বাস মালিকের। অত্র মামলার আসামি ড্রাইভার ও হেলপারদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বুদ্ধিমত্তা যাচাই ছাড়াই মালিক শাহাদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের নিয়োগ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন- দুই শিক্ষার্থী নিহতের মামলায় ৩ সহপাঠীর সাক্ষ্যগ্রহণ
মামলার আরও দুই আসামি সোহাগ আলী ও রিপন হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদেরকে মামলায় দায় হতে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই দুপুরে কালশী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে ছিলেন। জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস ফ্লাইওভার থেকে নামার সময় মুখেই দাঁড়িয়ে যায়। এ সময় পেছন থেকে আরেকটি দ্রুতগতি সম্পন্ন জাবালে নূরের বাস ওভারটেক করে সামনে আসতেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে বাসটির চাকার নীচে পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় রাজধানীর শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী আবদুল করিম ওরফে রাজীব (১৭) ও দিয়া খানম ওরফে মিম (১৬)। আরও নয়জন আহত হয়। ওই ঘটনায় ২৯ জুলাই দিবাগত রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম এ মামলা দায়ের করেন।
সারাবাংলা/এআই/আরএ