Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সিকিউরিটি গার্ডকে টাকা না দিলে দূতাবাসে ঢুকতে দেয় না’


২০ নভেম্বর ২০১৮ ২০:১৬

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিদেশে আমাদের দূতাবাসগুলো বাংলাদেশিদের কোনো সহযোগিতা করে না। দূতাবাসে গেলে প্রথমে সিকিউরিটি গার্ড (নিরাপত্তা রক্ষী) বাধা দেয়। তাকে টাকা না দিলে দূতাবাসে ঢুকতেও দেয় না। বাংলাদেশের একজন নাগরিককে তারা কোনো মূল্যায়ন করে না।

মঙ্গলবার (২০ নভেম্বর) চট্টগ্রামে নিরাপদ অভিবাসন নিয়ে কারিতাস আয়োজিত এক সেমিনারে জাহাঙ্গীর আলম নামে মধ্যপ্রাচ্য ফেরৎ এক যুবক এসব কথা বলেছেন। একই সেমিনারে আরও কয়েকজন মধ্যপ্রাচ্য ফেরৎ ব্যক্তি বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অসহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

‘নিরাপদ অভিবাসন: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বিদেশ যাওয়ার জন্য চট্টগ্রামে পাসপোর্ট করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন এবং ঘুষ দিতে বাধ্য হওয়ার কথাও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে গেলাম। পাসপোর্ট ফরম পূরণ করে বারবার যাওয়ার পরও ফেরৎ দেওয়া হলো। এক পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের এক কর্মী বললেন, দালাল ধরতে। শেষ পর্যন্ত দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট করলাম। কাতারে গিয়ে বুঝতে পারলাম আমি প্রতারিত হয়েছি। যে ভিসার কথা বলা হয়েছে, সেভাবে চাকরি বেতন কিছু দেওয়া হয়নি। দূতাবাসের শরণাপন্ন হলাম। সেখানেও দালালের দৌরাত্ম্য।

২০১৭ সালে দাম্মাম থেকে ফিরে আসেন চন্দনাইশের কাজী মো. রহুল আমিন। তিনি বলেন, আকামা শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমি বাংলাদেশ দূতাবাসে গিয়েছিলাম। বলেছিলাম, আমি গরিব মানুষ। অনেক টাকা খরচ করে বিদেশে এসেছি। এই মুহূর্তে ফিরে গেলে সব শেষ হয়ে যাবে। আমাকে একটু সহযোগিতা করুন। দূতাবাসের কর্মকর্তারা আমাকে কোনো সহযোগিতা করেনি। তারা সরাসরি বলেছে এই ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই। আপনি দেশে ফিরে যান।

দুবাই ফেরৎ মো. সাইফুদ্দিন বলেন, দুবাই গিয়ে অনেকদিন বেকার ঘুরেছি। দূতাবাসে গেলে তারা ভালো করে কথাও বলেনি। পরে বাংলাদেশে ফিরে এসেছি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, পাসপোর্ট অফিসে আগে অনেক হয়রানি হতো। তবে আগের চেয়ে কমেছে। এখন সেবার মান ভালো হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশনও দ্রুত হয়। দূতাবাসে নানা হয়রানিতে পড়তে হয়- এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। অভিবাসন দফতর, গামকাসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের এসব ব্যাপারে আরও সাবধান হতে হবে।

এ সময় প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ হয়ে বিদেশে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ বি এম আবু নোমান। এতে বলা হয়, জনশক্তি আমাদের প্রধান সম্পদ। এই খাত থেকে জিডিপিতে অবদান ৯ শতাংশ। অভিবাসনকে নিরাপদ করতে অনেক আইন ও নীতিমালা প্রণিত হয়েছে। তবে আইনের বাস্তবায়ন এখনও কার্যকর না।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কারিতাসের আঞ্চলিক পরিচালক জেমস গোমেজ। উন্নয়ন সংগঠক শরীফ চৌহানের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল আলম মজুমদার, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক চট্টগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক সুমন কান্তি দেব, বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম গামকা অফিস চট্টগ্রামের মহাব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম, একটি বেসরকারি সংস্থার প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, অভিবাসন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শ্যামল মজুমদার।

সারাবাংলা/আরডি/এটি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর