মোরশেদ খান মনোনয়ন পেলে বিএনপি নেতাদের গণপদত্যাগের হুমকি
২৫ নভেম্বর ২০১৮ ২০:৩৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী এম মোরশেদ খান আবারও মনোনয়ন পেলে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের বিএনপির নেতা-কর্মীরা গণপদত্যাগ করার হুমকি দিয়েছেন।
দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোরশেদ খান আবারও বিএনপির মনোনয়ন পাচ্ছেন বলে রোববার (২৫ নভেম্বর) সকাল থেকে খবর ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামে। এই খবর শুনে বিকেলে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে জরুরি বৈঠকে বসেন বিএনপির একদল নেতা-কর্মী।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর নাজিম উদ্দিন আহমদ। বৈঠক থেকে বিএনপি নেতারা মোরশেদ খানকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য বিএনপির নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করেন। তার পরিবর্তে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
নাজিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শুধু নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এই নির্বাচনকে আমরা আন্দোলন হিসেবে বিবেচনা করছি। যেহেতু আন্দোলন, তাহলে গত ১০ বছর ধরে যারা রাজপথে ছিলেন তাদের দলীয়ভাবে মূল্যায়ন করা হোক। আবু সুফিয়ান রাজপথে ছিলেন, জেল-জুলুম সহ্য করেছেন। মোরশেদ খানকে গত ১০ বছর একদিনও আমরা রাজপথে দেখিনি। আবু সুফিয়ানকে মনোনয়ন দেওয়া হলে, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বুঝতে পারবে, সত্যিই বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচনে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মোরশেদ খানের মনোনয়ন আমরা কোনোভাবেই মানব না। কেন্দ্র যদি তৃণমূলের কথা না শুনে আবার মোরশেদ খানকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমরা গণপদত্যাগে সম্মত হয়েছি। কারণ ত্যাগী নেতাকে বাদ দিয়ে যারা মাঠে থাকে না তাদেরকে মনোনয়ন দিলে, ভবিষ্যতে নেতা-কর্মী খুঁজে পাওয়া যাবে না।
বৈঠকে নগর বিএনপির সহসভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুল আলম, যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম মঞ্জু, সহসাধারণ সম্পাদক জি এম আইয়ুব খান, মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক মো. বখতেয়ার, বোয়ালখালী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র আবুল কালাম আবু, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মো. ইদ্রিস আলী, মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জানে আলম জিকু ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম হিরামন, পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. হাসান লিটন, পাঁচলাইশ ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম আবুল কালাম আবু ছিলেন।
শিল্পপতি এম মোরশেদ খান ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় কারাগারে গিয়ে দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হন মোরশেদ খান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। তার বদলে মনোনয়ন দেওয়া হয় পোশাক ব্যবসায়ী এরশাদ উল্লাহকে। কিন্তু মোরশেদ খান ও তার অনুসারীদের বিরোধিতায় এরশাদ উল্লাহ জিততে পারেননি বলে বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই