ইসি’র নির্দেশনার অপেক্ষায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৬ লাখ সদস্য
২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৮:৫৩
।। সাদ্দাম হোসাইন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধে এবং নির্বাচনি পরিবেশ স্থিতিশীল রাখতে মাঠে নামতে প্রস্তুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৬ লাখ সদস্য। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা পেলেই কাজ শুরু করবেন তারা।
পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ ছাড়াও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব), কোস্ট গার্ড, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও থাকবেন নির্বাচনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে। এসব সদস্যদের দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও একাগ্রতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি রাখতে গঠন করা হবে আলাদা টিম। সব কিছুকে মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কর্মপরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেশের প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ নির্বাচনি এলাকায় নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। সেই সঙ্গে সাঁড়াশি অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও এসব অস্ত্র ব্যবহারকারীদের গ্রেফতার করা হবে। এসব অবৈধ অস্ত্রের উৎসেরও সন্ধান করবেন তারা। এ ধরনের কর্মপরিকল্পনার চূড়ান্ত তালিকা এরই মধ্যে ইসি দফতরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে নির্দেশনা পেলে দুয়েকদিনের মধ্যেই শুরু হবে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান।
আরও পড়ুন: পক্ষপাতদুষ্ট ডিসি-এসপিদের বদলিসহ ১৩ দফা দাবি ২০ দলের
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব এলাকায় নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে সহিংস পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে বা যেসব এলাকায় সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে, সেসব এলাকাকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। সে অনুযায়ী রাজধানীসহ সারাদেশে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র বাছাই করে রেড, ইয়োলো ও গ্রিন— এই তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে তালিকা করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রে প্রয়োজন অনুযায়ী ১৫ থেকে ২০ জন করে জনবল রাখা হতে পারে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, নির্বাচনি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্প্রতি পুলিশের আইজিপি ড. জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে বেশকিছু দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ও কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আলোকে চূড়ান্ত কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে সারাদেশের চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সবাইকে।
পুলিশ প্রশাসনের কারণে যেন নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, সেজন্য ইসির নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ দেওয়া হয় সভায়। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধ ও নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতেও বলা হয় কর্মকর্তাদের। পাশাপাশি মনোনয়ন ফরম বিতরণকে ঘিরে রাজধানীতে যেন কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে বিষয়েও কঠোর নজরদারি রাখতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক সোহেল রানা সারাবাংলাকে বলেন, দু’দিন আগে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নির্বাচনি পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে ইসি যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, তা যথাযথভাবে পালন করার জন্য মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ফোর্স ম্যানেজমেন্ট, ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজমেন্ট ও কমিউনিকেশন ম্যানেজমেন্টের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এখন ইসির নির্দেশনা পেলেই আমরা মাঠে নামব।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর