হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ
৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:৩৩
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
হবিগঞ্জ: আজ ৬ ডিসেম্বর, হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধ গড়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যদের হবিগঞ্জ ত্যাগ করতে বাধ্য করে। মুক্ত হয় হবিগঞ্জ জেলা। তবে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও হবিগঞ্জের অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন ও বীরাঙ্গনাদের তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
হবিগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হবিগঞ্জ সদর উপজেলা ইউনিট। এ উপলক্ষে ৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধের স্মৃতিসৌধ দুর্জয় থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের করা হবে। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্লাহ।
জেলার মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় তেলিয়াপাড়া ডাকবাংলো থেকে সারাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের ১১টি সেক্টর বিভক্ত করা হয়। ৩ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন তৎকালীন মেজর শফিউল্লাহ। শফিউল্লাহর নেতৃত্বে হবিগঞ্জের সীমান্ত এলাকার দুর্গম অঞ্চলগুলোতে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিবাহিনী জেলা শহরের কাছাকাছি এসে পৌঁছলে তিন দিক থেকে মুক্তিবাহিনী আক্রমণ করে।
৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ শহরে প্রবেশ করে এবং ৬ ডিসেম্বর ভোর রাতে পাকিস্তানি সেনাসহ রাজাকাররা আত্মসমর্পণ করে। পরে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের নেতা মো. শাহাজাহান মিয়াসহ মুক্তিযোদ্ধারা হবিগঞ্জ সদর থানা কম্পাউন্ডে বিজয় পতাকা উত্তোলন করেন। মুক্তিযুদ্ধে জেলার ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। যুদ্ধে আহত হন ৩৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। এসব শহীদদের জন্য তেলিয়াপাড়া, ফয়জাবাদ, কৃষ্ণপুর, নলুয়া চা বাগান, বদলপুর, মাখালকান্দিতে বধ্যভূমি নির্মিত হয়।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ হবিগঞ্জ সদর ইউনিটের কমান্ডার আব্দুস শহীদ জানান, তার নেতৃত্বে ৩ নম্বর সেক্টরের একটি প্লাটুন ২ ডিসেম্বর হবিগঞ্জ শহরের পাশে এসে আস্তানা গড়ে এবং দুই দালালকে আটক করে হত্যা করা হয়। পরে ৫ ডিসেম্বর ঘেরাও করা হয় হবিগঞ্জ শহর। তখন পাক সেনার পালিয়ে যায়। ৬ ডিসেম্বর সকালে আমরা শহরে প্রবেশ করি এবং থানায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করি। জনগণ আমাদেরকে জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানায়।
একই দিন হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট ও নবীগঞ্জ উপজেলাকেও শত্রুমুক্ত করা হয় বলে জানান কমান্ডার আব্দুস শহীদ।
সারাবাংলা/এমএইচ