ফুলের বাজার সম্প্রসারণে দরকার স্থায়ী বাজার ও গবেষণা কেন্দ্র
৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ২২:৫৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: “বড় হচ্ছে ফুলের বাজার, বিশ্ব বাজারে বাড়ছে চাহিদা। তবে প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশের রফতানি খুই কম। রফতানি বাড়াতে প্রয়োজন অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা। এছাড়া ফুলের সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দেশে গবেষণা দরকার। এজন্য ফুল গবেষণা কেন্দ্র নামে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান গঠনের দাবি উঠেছে। এছাড়া স্থায়ী বাজার নির্মাণসহ ফুলের রফতানি বাড়াতে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার গ্রোওয়ার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়শন’ নামের সংগঠনও গঠন করা যেতে পারে।”
বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিন দিনব্যপী আন্তর্জাতিক ফুল প্রদর্শনী ও সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
ইউএসএআইডি’র সহায়তা ও বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সমন্বয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। এতে দেশি-বিদেশি ৭০ টি স্টল অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, “দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের কারণে ফুলের ব্যবহার বাড়ছে। দেশে ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফুল শিল্পের বিকাশে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপন ও গবেষণা পরিচালনা প্রয়োজন। দেশে ফুলের বাজার সম্প্রসারণ ও রফতানি বৃদ্ধিসহ সার্বিক উন্নয়নে ‘বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার গ্রোওয়ার্স অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়শন’ নামে একটি সংগঠন স্থাপনের ব্যাপারেও কথা বলেন তিনি, যে সংগঠনটি এ খাতের নীতিসহায়তা প্রাপ্তিতে সরকার ও স্টেকহোল্ডাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।”
ডিসিসিআই সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘সারাবিশ্বে প্রতিনিয়তই ফুলের চাহিদা বাড়ছে। পৃথিবীতে ফুলের বাজার বাড়ছে ১০ শতাংশ হারে। বর্তমানে বাংলাদেশে ফুলের বাজার ৮০০ থেকে ১২০০ কোটি টাকার। ফুল রফতানি থেকে বছরে আয় ৮৬ হাজার ডলার। তবে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের চেয়ে ফুল রফতানিতে পিছিয়ে আছে দেশ। এজন্য উদ্যোক্তা বিকাশে নীতি সহায়তা ও ফুল খাতের বিকাশে হিমাগার প্রয়োজন।’
২০ জেলায় ১২ হাজার হেক্টর জমিতে ফুল চাষের তথ্য জানিয়ে এর সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ প্রয়োজন বলে মত দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুর রউফ।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আবদুর রহিম বলেন, ‘খাতটির বিকাশে ফুলের স্থায়ী পাইকারি বাজার দরকার। কৃষি মন্ত্রণালয় বাজার স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও এখনও তা বাস্তবায়ন হয়নি।’ তাই দ্রুত স্থায়ী বাজার গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। ফুলের নতুন নতুন জাত উদ্ভাবনে ‘ফুল গবেষণা কেন্দ্র’ স্থাপনেরও আহ্বান জানান ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি।
ইউএসএইড’র ডিরেক্টর থমাস পোপ বলেন, “বাংলাদেশের কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নে ইতোমধ্যে ইউএসএইড’র পক্ষ হতে প্রায় ৩ হাজার কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশে ফুলের বাণিজ্যিক চাষাবদ ও এখাতের ভ্যালু চেইনের উন্নয়নে ইউএসএইড সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।’
এসময় ফুলের বিকাশে নীতি সহায়তা, গবেষণা পরিচালনা ও দক্ষ জনবল তৈরি ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের উপর জোর দেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আনোয়ার ফারুক।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমও