গণতন্ত্রের যাত্রাকে থামিয়ে দিতে চায় জামায়াত: কংগ্রেসম্যান
১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৪১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: বাংলাদেশের গণতন্ত্রের যাত্রাকে থামিয়ে দিতে চরমপন্থা সংগঠন জামায়াতে ইসলামী গভীর ষড়যন্ত্র করছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জন্য এই সংগঠন বড় একটি হুমকি। সংগঠনটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আনুকূল্য পেতে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান (লবিং ফার্ম) নিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা সংস্থা হাডসন ইন্সটিটিউট এর উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা, গণতন্ত্র এবং ইসলামবাদ’ শীর্ষক আলোচনায় ওপরের তথ্যগুলো উঠে আসে। আলোচনা অনুষ্ঠানটি গত ১৩ ডিসেম্বর ওয়াসিংটনে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রখ্যাত রাষ্ট্রদূত ও হাডসন ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো হুসাইন হাক্কানির সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাঙ্কস, লিবার্টি সাউথ এশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সেথ ওল্ডমিক্সন, ইসলামিস্ট ওয়াচের পরিচালক স্যাম ওয়েস্ট্রপ এবং সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক অনুসন্ধানী কাজের বিশ্লেষক আভা শঙ্কর।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী কংগ্রেসম্যান জিম ব্যাঙ্কস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশে আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য হোক। বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু চরমপন্থা সংগঠন জামায়াতে ইসলামী আসন্ন নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের হুমকি।’
জিম ব্যাঙ্কস বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে জরিপ চালিয়ে দেখেছি ৭৬ শতাংশ বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। বাংলাদেশের মানুষ অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশের মানুষের এই মনোভাবকে সমর্থন জানায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের যাত্রা এখনো পরিপক্ক হয়নি। গণতন্ত্রের এই যাত্রাকে এখানেই গলা টিপে ধরতে চায় জামায়াত। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র চরমপন্থা দল হিসেবে জামায়াতকে চিহ্নিত করেছে এবং তাদেরকে কোনো ধরনের সহায়তা না করার জন্য বিশ্বব্যাপী বার্তা দিয়েছে।’
লিবার্টি সাউথ এশিয়ার প্রতিষ্ঠাতা সেথ ওল্ডমিক্সন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আনুকূল্য পেতে জামায়াত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করেছে। জামায়াতের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেয়ার কারণ হচ্ছে যে তারা ইচ্ছমতো সহিংসতা চালিয়ে যাবে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের কিছু বলবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াত মূলত কোনো রাজনৈতিক দল নয়। বিগত ১৯৪১ ভারতে জন্ম নেওয়া জামায়াত বাংলাদেশেরও কোনো দল নয়। জামায়াতের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ জন্মের সময় জামায়াত ঘোর বিরোধী অবস্থানে থেকে প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। অথচ এই জামায়াত বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো প্রভাব বিস্তার করে।’
সেথ ওল্ডমিক্সন বলেন, ‘অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে। অভিজ্ঞ এবং ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিবিদ কামাল হোসেন বিএনপি’র সঙ্গে ঐক্য জোট গড়েছেন, যিনি এক সময়ে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ছিলেন। কামাল হোসেন বিএনপির সঙ্গে ঐক্য গড়ার সময় শর্ত দিয়েছিলেন যে জামায়াতকে সঙ্গে নেওয়া যাবে না। কিন্তু তার শর্ত এক সপ্তাহও টেকেনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জোটে গিয়ে কামাল হোসেনের দল পেয়েছে ১৭ বা ১৯টি আসন। অথচ জামায়াত পেয়েছে ২৫টি আসন। জামায়াত এখনো বাংলাদেশের রাজনীতির অনেকাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, যা ভয়ঙ্কর।’
সারাবাংলা/জেআইএল/এমএইচ