।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: গণসংযোগের সময় সেগুনবাগিচা এলাকায় হামলার শিকার ঢাকা-৮ আসনে বিএনপি প্রার্থী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘সহকর্মীদের উসিলায় কোনো রকম প্রাণে বেঁচে গেছি। ওরা আমাকে রক্ষায় ঝাঁপিয়ে না পড়লে এখন হয়তো আপনাদের সামনে কথা বলতে পারতাম না।’
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে শাহজাহানপুরে তার বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি তখন পেছন থেকে চলে আসছি। হঠাৎ করে কেন যেন একটু পেছনের দিকে ঘুরলাম। দেখলাম, একটা ছেলে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করছে আমাকে। ওই আঘাত প্রতিহত করতে গিয়ে আমার একটা ছেলের হাত ভেঙে গেল। আঘাতটা লাগলে আমি হয়তো মারাই যেতাম।’
‘আজকের যে সিচ্যুয়েশন হয়েছে, তারপরও আমি চেষ্টা করব এলাকার লোকজনের কাছে পৌঁছাবার। যদি না পারি— এটা হবে আমার নেহায়াত-ই অপারগতা। অর্থাৎ শারীরিক ও নিরাপত্তাজনিত কারণে হয়তো আমি পৌঁছাতে পারব না’— বলেন আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘আমার গোডাউনে পোস্টার পড়ে আছে, লিফলেট পড়ে আছে। কিন্তু সেগুলো লাগাতে পারছি না। পোস্টার লাগাতে গেলে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করছে। অথচ অপজিশন পার্টির পোস্টারে ছেয়ে গেছে ঢাকা শহর। এই যে একটা বিরূপ আচরণ সরকারের। তারা তো সবই নিয়ে গেছে। আর কী বাকি আছে? এই নির্বাচনের পর কী হবে— সেটা অনুমেয়। তবে এ সম্পর্কে কোনো ভবিষ্যৎবাণী করতে চাই না।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে আমার স্ত্রী তার নির্বাচনি প্রচার কাজ চালিয়ে বাসায় ঢুকল। সঙ্গে ছেলেরা আসছে, মেয়েরা আসছে। পেছন থেকে সাতজন ছেলেকে তারা গ্রেফতার করে নিয়ে গেল। একদিকে আওয়ামী পেটোয়া বাহিনীর অত্যাচার, অন্যদিকে পুলিশি অত্যাচার। আমরা কোনটা সহ্য করে নির্বাচন করব, আমাদের রাস্তাটা কী?’
‘আমি সরকারের কাছে জানতে চাই, কী করলে আপনারা খুশি হবেন?— এই কথাটা দয়া করে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন। আপনারা বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে যেতে চায়। আমি বলতে চাই, বিএনপিকে আপনারা নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিএনপি নির্বাচন থেকে সরবে না’— বলেন মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দিতে যাবে। তাদের রায়ের সঠিক প্রতিফলন ঘটবে। সেই প্রতিফলন বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্টের পক্ষে আসবে। তা নাহলে, এ দেশের জনগণ বুঝে নেবে- নির্বাচন কমিশন জনগণের সঙ্গে ধাপ্পাবাজি করছে।’
হামলায় আহতদের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আহতের সংখ্যা আমাদের অনেক। এরা বিভিন্ন জায়াগায় ট্রিটমেন্টে আছে। একটা ছেলে ট্রিটমেন্টের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল, ওখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে গেছে। অন্যদের অনেকেই প্রচণ্ড রকম আঘাতপ্রাপ্ত। তাদের নিয়ে আগামীতে নির্বাচন করা কঠিন হবে। যাই হোক, বিচারের ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দিলাম।’
মির্জা আব্বাস জানান, হামলায় তার দেহরক্ষীসহ ৬০ জনের মতো আহত হয়েছেন, সাংবাদিক আহত হয়েছেন, তার ব্যক্তিগত ক্যামেরাম্যান আহত হয়েছেন। গ্রেফতার হয়েছেন তার বাড়ি থেকে কমপক্ষে ৭ জন, হাসপাতাল থেকে ২ জন।‘
তিনি বলেন, ‘আজকে আমি নিজে হামলার শিকার হয়েছি। এখন হামলার শিকার তো বরাবরই হচ্ছি। নতুন কিছু তো না। হামলা-মামলা মোকাবেলা করেই আমরা নির্বাচনে আছি। এই ধরনের হামলা আমাদেরকে করতে পারেন। আমরা বীরের মতো বুক পেতে নেব। কিন্তু আমাদের পিঠে কোনো আঘাত লাগবে না। আমরা পলায়নপর হবো না। আমি নির্বাচনি প্রচারণায় আবারও নামব।’
যারা আঘাত করেছে তাদেরকে চেনা গেছে দাবি করে মির্জা আব্বাস জানান, শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের নেতা সোহেল হাসান, দক্ষিণ ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় দাস, বাবু, মুরাদ, রেজাউল, সোহাগ, রাকিব তার গণসংযোগে হামলা করেছে।
সারাবাংলা/এজেড/এটি