বিভিন্ন দেশে বিজয় দিবস উদযাপিত
১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০০
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে ৪৮তম মহান বিজয় দিবস। দেশের বাইরেও বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনে দিবসটি উদযাপিত হয়েছে।
ভারত
ভারতের নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭১ সালের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে ৪৮তম বিজয় দিবস পালন করেছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে হাইকমিশন মুক্তিযুদ্ধে ভারতের পূর্ণাঙ্গ সমর্থন ও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। ডেপুটি হাইকমিশনার এ টি এম রকিবুল হক অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। পরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের মহান বিজয় দিবসের বাণী পাঠ করা হয়। দিবসটি উদযাপনে সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) এক সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজন করবে ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশন।
এদিকে, ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী কলকাতায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদতবরণকারী তার পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
ইতালি
ইতালিতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল মিলানের উদ্যোগে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় বিজয় দিব্স উদযাপনের আয়োজন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে এক মিনিট নিরবতা পালন ও বিশেষ দোয়া প্রার্থনা করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে সভাপতির বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল ইকবাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান কনসাল এ কে এম শামসুল আহসান এবং কনসাল (শ্রম) মো. রফিকুল করিম।
বিজয় দিবসের আলোচনায় অংশ নেন মিলান লোম্বার্দিয়ার আওয়ামী লীগ, মিলান বাঙলা প্রেস ক্লাব সাংবাদিক নেতাসহ কমিউনিটি ব্যক্তিরা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধের একটি বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। সবশেষে সাংস্কৃতিক পর্বে আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্থানীয় শিল্পীরা।
সৌদি আরব
বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, জেদ্দার উদ্যোগে ৪৮তম মহান বিজয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে উদযাপিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে এ আয়োজনের সূচনা করেন কনসাল জেনারেল। পরে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মসূচির আলোকে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, জেদ্দার বাংলা ও ইংরেজি শাখার শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ‘বিজয়ফুল’ তৈরি, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রচনা প্রতিযোগিতা ও স্বরচিত কবিতা/ছড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেদ্দায় বসবাসকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংর্বধনা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। সব শেষে কনস্যুলেট প্রাঙ্গণে স্থাপিত স্মৃতিসৌধে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয় এবং কনসাল জেনারেল এফ এম বোরহান উদ্দিনের বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয় অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে কনস্যুলেটের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, জেদ্দার বাংলা ও ইংরেজি শাখার শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জেদ্দায় বাংলাদেশি কমিউনিটির বিভিন্ন ফোরামের নেতা, পেশাজীবী ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মিয়ানমার
মিয়ানমারের ইয়াংগুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দূতাবাসে দুইটি পৃথক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী সকালে দূতাবাসে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন ।
এ সময় দূতাবাসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিজয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভায় রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাাণী পাঠ করা হয়।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখা সবার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে স্বাধীনতা সংগ্রামের লক্ষ্যগুলো অর্জনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
পরে সন্ধ্যায় দূতাবাসে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
জাপান
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাপানের বাংলাদেশ দূতাবাস দেশের ৪৮তম বিজয় দিবস উদযাপন করেছে। টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রাঙ্গণে দিনের কার্যক্রম শুরু হয় জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে পরবর্তী অনুষ্ঠানে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করা হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধ গান ও কবিতা আবৃত্তি করেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি ও জাপানি নাগরিক। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
ভিয়েতনাম
ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত, আলোচনা অনুষ্ঠান এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
ভিয়েতনামে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ সকালে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচির সূচনা করেন। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং ভিয়েতনামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসী এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, ভিয়েতনামের ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ডিন (ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রদূত) এবং ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাসস।
সারাবাংলা/কেকে/টিআর