Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সরকারি চাকরিতে মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনার অঙ্গীকার আ.লীগের


১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১১:৩৫

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসঙ্গত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই অঙ্গীকার নিয়ে ‘তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি: তরুণ-যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর ও কর্মসংস্থানে নিশ্চয়তা’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইশহেতার ঘোষণা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এই ইশতেহার ঘোষণা করেন।

অনুষ্ঠানে ইশতেহার উপ-কমিটির আহ্বায়ক আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক সূচনা বক্তব্য রাখেন। ২১ সদস্য বিশিষ্ট ইশতেহার উপ-কমিটির সদস্য সচিব হলেন ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। ইশতেহার ঘোষণার অনুষ্ঠানে কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ইশতেহারে তারুণ্যের শক্তিকে জোর দিয়ে বাংলাদেশের সমৃদ্ধির অঙ্গীকার করা হয়েছে। ইশতেহারে বলা হয়েছে,যুবসমাজ দেশের মূল্যবান সম্পদ। বাংলাদেশের মোট এক তৃতীয়াংশ যুবসমাজ। যা প্রায় কোটি ৩০ লাখ। সোনার বাংলা’র স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধানতম শক্তি যুবশক্তি। দেশের এই যুবগোষ্ঠীকে সুসংগঠিত সুশৃংখল এবং উৎপাদনমুখী শক্তিতে রূপান্তরের লক্ষ্য অর্জনে আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যুব উন্নয়নে আমাদের অগ্রাধিকার যুবদের মানস্মত শিক্ষা, দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ও সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা, রাজনৈতিক ও নাগরিক ক্ষমতায়ন এবং সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও মাদকমুক্ত সমাজ।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: আ.লীগের ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখার অনুরোধ

এলক্ষ্যে লক্ষ্য ও পরিকল্পনার কথা তুলে বিগত ১০ বছরের সাফল্য ও অর্জনগুলো কথা উল্লেখ করা হয়। ইশতেহারে বলা হয়েছে, একটি সুচিন্তিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের মাধ্যমে জাতীয় যুবনীতি পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তরুণদের কল্যাণ ও উন্নয়ন কাজে প্রশাসনিক গতি আনতে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়েরআওতায় গঠন করা হবে পৃথক যুব বিভাগ। জাতীয় বাজেটে বাড়ানো হবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আর্থিক বরাদ্দ। জেন্ডার বাজেটের আলোকে প্রণয়ন করা হবে বার্ষিক যুব বাজেট। তরুণদের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করার জন্য গঠন করা হবে যুব মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন যুব গবেষণা কেন্দ্র।

শিক্ষা ও দক্ষতা কর্মসংস্থান বৃদ্ধির অঙ্গীকার তুলে ধরে বলা হয়, স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাকে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুযোপযোগী করতে কারিগরি শিক্ষা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে অধিকতর বিনিয়োগ করা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য আর্থিক ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অগ্রাধিকার পাবে। তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি উপজেলায় প্রসারিত করার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রতিটি উপজেলায় যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি এই কেন্দ্রগুলোকে পর্যায়ক্রমে তরুণ কর্মসংস্থান কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করা হয়। জাতীয় পর্যায়ে স্বল্প মধ্যম ওউচ্চ শিক্ষিত তরুণদের তথ্য সম্বলিত একটি ইন্টিগ্রেটেড ডাটাবেইজ তৈরি করা হবে। এর মাধ্যমে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজন ও তরুণদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদন করার আহ্বান জানাতে পারবে।

বিজ্ঞাপন

কর্মসংস্থানে কৃষি শিল্প ও সেবার অংশ যথাক্রমে ৩০, ২৫ ও ৪৫ শতাংশে পরিবর্তন করা হবে। ২০২৩ সালনাগাদ অতিরিক্ত ১ কোটি ৫০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। এছাড়াও উক্ত সময়ে নতুনভাবে ১ কোটি ১০ লাখ ৯০ হাজার মানুষ শ্রমশক্তিতে যুক্ত হবে। আত্মকর্মংস্থান ও তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা হওয়া প্রবণতা ও আত্মকর্মসংস্থান বৃদ্ধি করতে কর্মসংস্থান ব্যাংকের মাধ্যমে বিনা জামানতে ও সহজ শর্তে জনপ্রতি দুই লাখ পর্যন্ত ঋণ সুবিধা ইতোমধ্যে প্রদান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ সুবিধা আরও বিস্তৃত করা হবে।

আরও পড়ুন: আ.লীগের ইশতেহার : আমার গ্রাম হবে আমার শহর

তরুণ উদ্যোক্তাদের মধ্যে যারা সম্ভাবনার ছাপ রাখতে সক্ষম হবে তাদের জন্য আর্থিক, প্রযুক্তি, উদ্ভাবনসহ অন্যান্য সরকারি সুযোগ সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা হবে। তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য প্রণয়ন করা হবে একটি যুগোপযোগী তরুণ উদ্যোক্তা নীতি। তরুণদের সুস্থ বিনোদনের জন্য প্রতিটি উপজেলায় গড়ে তোলা হবে একটি করে যুব বিনোদন কেন্দ্র। যেখানে বিভিন্ন ইনডোর গেমসের সুবিধা, মিনি সিনেমা হল, লাইব্রেরি, মাল্টিমিডিয়া সেন্টার, সাহিত্যও সংস্কৃতি কর্ণার, মিনি থিয়েটার ইত্যাদি থাকবে।

স্বল্প খরচে তরুণদের কাছে ইন্টারেনটসহ বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা পৌছে দিতে ইয়ুথ প্ল্যান চালু করা হবে। উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ও জঙ্গিবাদের প্রথম লক্ষ্য যুবসমাজকে আকৃষ্ট করা। এই যুবসমাজ যাতে আদর্শিক ভ্রান্তিতে মোহাবিষ্ট হয়ে জঙ্গি তৎপরতায় যুক্ত না হয়, সেজন্য কাউন্সিলিং এবং তাদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশকে ত্বরান্বিত করা হবে।

আরও পড়ুন: ব্লু-ইকোনমি অগ্রাধিকার পেয়েছে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে

তরুণদের মাদকের ছোবল ভয়াল আসক্তি থেকে মুক্ত করতে প্রতিটি জেলায় একটি করে সরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় ও পুনবার্সন কেন্দ্র করা ও বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর জন্য সরকারি অনুদান বাড়ানো হবে। প্রতিটি জেলায় একটি করে যুব স্পোর্টস গড়ে তোলা হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের যাত্রায় যুক্ত করা হবে তরুণদের। মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে আমলে নেওয়া হবে তুণদের বক্তব্য। জাতীয় যুবনীতির বাস্তবায়নে অগ্রগতি পরীবীক্ষণেও যুক্ত করা হবে, সমাজের সকল স্তরের তরুণদের।

সারাবাংলা/এনআর/এসএমএন

আওয়ামী লীগের ইশতেহার সরকারি চাকরি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর