রেজা কিবরিয়া ধানের শীষে, এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রী
২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৭:০৪
।। নৃপেন রায়।।
সিলেট: হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করার বিষয়টি লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় সিলেট বিভাগের প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সময় শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নৌকা মানুষের বিপদের বন্ধু
তিনি বলেন, ‘এম এস কিবরিয়াকে হত্যা করেছে বিএনপি। বাপের হত্যাকারী দলের হয়ে ধানের শীষে কিবরিয়ার ছেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর থেকে লজ্জাজনক আর কিছু হতে পারে না।’
এ সময় রেজা কিবরিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের গাজী মো. শাহনেওয়াজের পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট চান শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন: মাজার জিয়ারত শেষে জনসভায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী
জনসভার এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি সুনামগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সুনামগঞ্জ-২ আসনের জয়া সেনগুপ্তা, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে এম এ মান্নান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের পীর ফজলুর রহমান (জাপা), সুনামগঞ্জ-৫ আসনে মুহিবুর রহমান মানিক, মৌলভীবাজার-১ আসনের প্রার্থী শাহাব উদ্দিন, মৌলভীবাজার-২ আসনে বিকল্পধারার প্রার্থী এম এম শাহীন, মৌলভীবাজার-৩ আসনের নেছার আহমেদ, মৌলভীবাজার-৪ আসনের উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, হবিগঞ্জ-২ আসনের মো. আবদুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৩ আসনের আবু জহির, হবিগঞ্জ-৪ আসনের মো. মাহবুব আলীকে পরিচয় করিয়ে দেন।
এছাড়া শেখ হাসিনা সিলেট-১ আসনে ড. একে এম আবদুল মোমেন, সিলেট-২ আসনে ইয়াহইয়া চৌধুরী (জাপা), সিলেট-৩ আসনে মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস, সিলেট-৪ আসনে ইমরান আহমদ, সিলেট-৫ আসনে হাফিজ আহমেদ মজুমদার, সিলেট-৬ আসনে নুরুল ইসলাম নাহিদকে পরিচয় করিয়ে দেন।
এর আগে জনসভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘হজরত নূহ (আ.) এর নৌকা বিপন্ন মানুষকে যেভাবে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছিল সেভাবে আওয়ামী লীগের নৌকা মানুষের বিপদে এগিয়ে এসেছে। নৌকা মানুষের বিপদের বন্ধু।’
বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক আদর্শ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি-জামায়াত জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এরা মানুষ পুড়িয়ে মারা ছাড়া আর কিছু পারে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুর্নীতি, এতিমের টাকা চুরি করায় বিএনপি চেয়াপারসন আজ সাজাপ্রাপ্ত। তার বিরুদ্ধে মামলা আওয়ামী লীগ দেয়নি। খালেদা জিয়ার পছন্দের সেনাপ্রধান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এই মামলা দিয়েছিল। সেই মামলায় তার সাজা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: সিলেটে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী, দুপুরে জনসভা
‘এছাড়া তার বড় ছেলে তারেক জিয়া অস্ত্র মামলা, বোমা হামলা মামলা, দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত। এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদেশের মাটিতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর ক্ষমতায় আসি। এসে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করি। কিন্তু ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। তারা ক্ষমতায় এসে গুম-খুন-হত্যার রাজনীতি শুরু করে। দেশকে তারা জঙ্গিবাদের দেশ, গুম-খুনের দেশ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। এরপর ২০০৮ সালে দুই মেয়াদে ক্ষমতায় এসে শিক্ষার হার বৃদ্ধি করেছি, বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি।’
‘আওয়ামী লীগ এলে জনগণের কল্যাণ হয়। জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন হয়’ বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তারুণ্য শক্তি, তরুণরায় আনবে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। তরুণদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ উন্নতির শিখরে পৌছে যাবে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
সিলেটের উন্নয়ন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সিলেটের চারটি জেলার উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। আগামী ক্ষমতায় এলে এই কর্মসূচিগুলো বাস্তবায়িত হবে। সিলেটে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না। নৌকা হলো বিপদের বন্ধু। নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনতা পেয়েছে। নৌকায় ভোট দেওয়ায় ত্রিশ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছি।’
শনিবার (২২ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সিলেটে পৌঁছান।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরান (রহ.) ও গাজী বোরহান উদ্দিন (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন শেখ হাসিনা। এরপর দুপুর সোয়া ৩টায় নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
সমাবেশ শেষে বিমানের ফ্লাইটে বিকেলেই ঢাকার পথে রওয়ানা দেবেন শেখ হাসিনা।
সারাবাংলা/এনআর/একে
আওয়ামী লীগ জাতীয়-নির্বাচন প্রধানমন্ত্রী রেজা কিবরিয়া শেখ হাসিনা