Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘নির্বাচনের আগে-পরে নাশকতার পুনরাবৃত্তি চাই না’


২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:১৫

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবাই যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে এবং ভোটের আগে ও পরে যেন কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে— নির্বাচনে নিয়োজিত সবার প্রতি সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

তারা বলেন, ২০০১ বা ২০১৪/১৫ সালের মতো ভোটের আগে ও পরে নাশকতার পুনরাবৃত্তি চাই না।

সোমবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘নির্বাচনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারীদের নিরাপত্তা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান বলেন, নির্বাচন এলেই আমাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা কাজ করে। এটা তো হওয়ার কথা ছিল না। ১৯৯১ সাল থেকে ধরলে আমরা ২৭ বছর ধরে গণতন্ত্র নিয়ে কাজ করছি। এ সময়ের মধ্যে গণতন্ত্র আরও মজবুত হতে পারত, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশ পেরেছে। আমরা পারিনি কেন, তা নিয়ে অনেক কথা রয়েছে। আমরা স্বাধীনতাবিরোধীদের এখনও দমন করতে পারিনি। ২০০১ সালে ভোটের পর দেখেছি, সারাদেশে কী ঘটেছে। সারাদেশে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হয়েছে, শিশুদের পর্যন্ত ধর্ষণ করা হয়েছে। বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়েছে। বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের। ২০১৪ সালে দেখেছি আগুন সন্ত্রাস। মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অতীত থেকে যদি শিক্ষা নেই, তাহলে আমাদের ভাবতে হবে। মূল্যবোধ নিয়ে কাজ করতে হবে। চেতনার উদ্ভব ঘটাতে হবে। এবার আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চাই। তার মানে এই নয় যে স্বাধীনতা বিরোধীরা এই নির্বাচনে অংশ নেবে। রাজাকারদের দোসররা থাকলে কোনো দিনও টেকসই গণতন্ত্র আসবে না। তাদের নির্বাসনে পাঠাতে হবে। তাদেরকে সরিয়ে দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম বলেন, আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আলোচনা করতে বসেছি। এটাও গণতন্ত্রের অংশ। গণতন্ত্র মানে শুধু নির্বাচন নয়। গণতন্ত্রটা নির্বাচনের আগেও চলে, পরেও চলে। নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে সারাবছরই আমরা কাজ করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গেও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছি। গোটা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় (ভোটের আগে ও পরে) সহিংসতা কমাতে একা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলো ও নাগরিকদেরও ভূমিকা রয়েছে। আমরা বলেছিলাম, সব দল যেন নির্বাচনে আসে। সেটি হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভালো মানসিকতার জন্য। এখন আমরা চাই, ভোটের আগে ও পরে নিরাপত্তার সাথে সুষ্ঠুভাবে সবকিছু শেষ হোক, কোনো ধরনের নাশকতা যেন না হয়। আমরা চাই, নারী ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যেন কারও টার্গেট হতে না পারে, সেই ব্যবস্থা যেন নেওয়া হয়।

আয়শা খানম বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনের পর সারাদেশে সহিংসতার পর আমরা মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওইসব জায়গায় গিয়েছিলাম। আমরা দেখেছি কতটা নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলছি, বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে। নির্বাচনের আগের দিন যেন কোনো প্রোপাগান্ডা না ছড়াতে পারে, সেজন্য নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সজাগ থাকতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের প্রত্যেকই যাতে সতর্ক থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে হবে, যেন ভোটাররা ভোট দিয়ে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারে। আমরা চাই নির্বাচনে যেন কোনো ধরনের নাশকতা না হয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় আমরা গিয়েছিলাম। সেখানে বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তারা কী চায়, কেমন বাংলাদেশ দেখতে চায়, কেমন নেতৃত্ব দেখতে চায়— এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আশা করছি, কোনো ধরনের সহিংসতা ছাড়ই একটি সুন্দর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে আগুন সন্ত্রাস হয়েছে, তা চাই না। যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে, যে অর্থনীতির ক্ষতি হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি চাই না। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান।

গোল টেবিল বৈঠকে বেশ কয়েকজন বিচারপতি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দু’দিনে ভারতে ৯৯ টন ইলিশ রফতানি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৪

সম্পর্কিত খবর