‘ড. কামাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন’
২৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৮:৪৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ও ঐক্যফ্রন্টকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে সমাজের বিশিষ্টজনরা বলেছেন, এবারের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মাধ্যমে র্নিধারিত হবে কোন পথে যাবে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মূল্যবোধের পক্ষে নাকি পাকস্তিানপন্থীদের পক্ষে। ড. কামাল হোসেন সরাসরি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি এখন জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন।
রাজধানী ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) এক গোলটেবিল আলোচনায় বিশিষ্টজনরা এ সব কথা বলেন।
সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাগরণ সম্পাদক আবেদ খান, ভূ-রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.), বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. আতিউর রহমান, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য মাহফুজা খানম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান, টাঙ্গাইল মওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আলাউদ্দিন, ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ডা. এম এ হাসান, বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মওলানা ফরিদউদদীন মাসউদ, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠক আরমা দত্তসহ আরো অনেকে। সঞ্চালনায় ছিলেন সম্প্রীতি বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় পর্ষদ সদস্য সাংবাদিক আলী হাবিব।
প্রারম্ভিক বক্তব্যে মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার (অব.) বলেন, আমরা সম্প্রীতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়েছি। মানুষের সঙ্গে মত বিনিময় করেছি। আমাদের উপলব্ধি হচ্ছে দেশের সর্বত্রই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মতো একটি পরিবেশ বিরাজ করছে। মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উৎসুক হয়ে আছে। সর্বত্রই নৌকার পক্ষে জনরব উঠেছে, জনমত গঠিত হয়েছে। ভোটের মাঠে বিএনপি বা ঐক্যফ্রন্টের কোনো উপস্থিতি দৃশ্যমান নয়।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বানচাল করার কিংবা নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার চক্রান্ডে লিপ্ত। বাংলাদেশের মানুষ সব চক্রান্ত রুখে দিয়ে ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে যাবে, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, সম্প্রীতি বাংলাদেশ যেমনটি চায়, তেমনি আমাদের সবারই প্রত্যাশা শঙ্কাহীন উৎসবমুখর নির্বাচন।
এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই ১৯৭১ সালের মতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, একদিকে মুক্তিযুদ্বের পক্ষ শক্তি, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষ সাম্প্রদায়িক শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থক গোষ্ঠী। তিনি বলেন, আমাদের প্রধান শঙ্কা ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন নিয়ে।
তিনি বলেন, একজন নির্বাচন কমিশনার যে আচরণ করছেন, তা কতটা গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন কমিশন যেমন আচরণবিধি নির্দিষ্ট করে দেয়, তেমনি তাদেরও আচরণবিধি থাকা দরকার।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্বদ্যিালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা খুবই শঙ্কার কথা যে স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরও স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি বাংলাদেশে শুধু অবস্থান করে তা নয়, তারা এখন এমন ষড়যন্ত্র করতে পারে যে, তার মধ্য দিয়ে ক্ষমতার রদবদল পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।
বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মওলানা ফরিউদদীন মাসউদ বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই এদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু বাঙালি জাতিগতভাবে আবার ফিরে এসেছে মঙ্গল ও কল্যাণের কাছে। জামায়াতকে ভোট দেওয়ার মানে হচ্ছে দেশের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা।’
গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অসীম কুমার সরকার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অরুণ কুমার গোস্বামী, বক্ষব্যাধী হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. কে সি গাঙ্গুলি, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, কলাম লেখক মমতাজ লতিফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তাপস কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ ফার্মাসিস্ট ফোরমের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ সৈকত, জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য কুদ্দুস আফ্রাদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান লালটু প্রমুখ।
সারাবাংলা/একে