নোয়াখালীতে নারীকে গণধর্ষণ, আসামিদের ধরতে কঠোর অবস্থানে পুলিশ
২ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:৪৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে গণধর্ষণের অভিযোগ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িতদের ‘কোনোভাবে ছাড় দেওয়া হবে না’ বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অ্যাডিশনাল ডেপুটি পুলিশ কমিশনার নাজমুল সুমন জানান, নোয়াখালীতে নির্যাতিত মহিলার বিষয়টি আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা অবগত। ঢাকার পুলিশের বিশেষ টিম অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। কোনোভাবেই পুলিশ এদের ছাড় দেবে না।
আরও পড়ুন: সুবর্ণচরে গণধর্ষণের ঘটনায় ২ আসামি গ্রেফতার
ওই নারীকে নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় গত ৩১ ডিসেম্বর চরজব্বার থানায় দণ্ডবিধি ১৪৩, ১৪৮, ৩২৩, ৪২৭, ৩২৬ সহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (৩) ধারায় মামলা হয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে এ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য একরামুল করিম আসামিদের ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর বরাত দিয়ে তার ছেলে সাবাব চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনায় জড়িতদের ধরতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে তারা সহযোগিতা করছেন। জড়িত কেউ আওয়ামী লীগের পদধারী নয়। এরা অতি উৎসাহী। আর বিএনপি এটা নিয়ে রাজনীতি করছে।’
এ ঘটনা নিয়ে তারা বাবা একরামুল চৌধুরী এমপি বৃহস্পতিবার নোয়খালীতে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলেও জানান সাবাব চৌধুরী।
চরজব্বার থানার ওসি নিজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, এ ঘটনায় ৯ আসামির মধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এদিকে এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। তবে নির্যাতিত নারী মারা যাওয়ার যে খবর ছড়িয়েছে তা সত্য নয় বলে জানিয়েছে পুলিশের সাইবার ক্রাইম টিম।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে গৃহবধূকে গণধর্ষণ
নোয়াখালী-৪ আসনে বিএনপি থেকে এমপি প্রাথী দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান সারাবাংলাকে জানান, তারা নির্যাতিতা নারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। নির্যাতিতা নারী যে বক্তব্য দিয়েছেন তার বাইরে দলের কোনো বক্তব্য নেই। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে।
জেলার সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবিলী ইউনিয়নের মধ্যবাগ্যা গ্রামে ভোটের পর রোববার রাতে এক নারীকে গণধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী (৪০) সাংবাদিকদের বলেন, রোববার সকালে তিনি তার এলাকায় পাঙ্খার বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়েছিল। এরপর রাতে নিজ বাড়িতে ধর্ষণের শিকার হন ওই নারী। রাত ১২টার দিকে এলাকার মোশারফ, সালাউদ্দিন, সোহেলসহ ১০-১২ জন তার বাড়িতে এসে প্রথমে বসতঘর ভাঙচুর করে, ঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পিটিয়ে আহত করে। পরে স্বামী ও স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ঘরে বেঁধে রেখে ওই নারীকে বাইরে নিয়ে পিটিয়ে আহত ও গণধর্ষণ করে।
সারাবাংলা/এসএ/একে