রাখাইন থেকে এবার পালাচ্ছে বৌদ্ধরা
৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:০১
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
মিয়ানমারের রাখাইন অঙ্গরাজ্যে সেনাবাহিনী ও সশস্ত্র বৌদ্ধ দলের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ এড়াতে বাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। গত এক মাস ধরে এই সংঘর্ষ আর পলায়নের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। একই অঙ্গরাজ্যে ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর নিপীড়নে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। খবর আল জাজিরার।
জাতিসংঘের মুখপাত্র ফারহান হক বুধবার (০২ জানুয়ারি) বলেন, ডিসেম্বরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও সশস্ত্র দল আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ২৫০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য বৃহত্তর ব্যক্তিস্বাধীনতা স্থাপন করতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে বেশ কয়েকটি দলের লড়াই চলছে। সেসব দলের মধ্যে একটি হচ্ছে আরাকান আর্মি।
গত মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এক ঘোষণায়, দেশটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চার মাস ধরে চলা লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘোষণা করে। বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে ওই ঘোষণা ছিল সশস্ত্র দলগুলোর সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরুর উদ্দেশ্যে একটি মৈত্রিসূচক পদক্ষেপ। তবে রাখাইনে লড়াই অব্যাহত ছিল। বিশ্লেষকরা সামরিক বাহিনীর এমন আচরণের প্রেক্ষিতে বলেন, মিয়ানমারে সত্যিকার অর্থে সকল লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে চায় না সেনাবাহিনী।
বিশ্লেষকদের মতে, সামরিক বাহিনী রাখাইনে লড়াই থামায়নি কারণ, তারা চায় না আরাকান আর্মি রাখাইনের প্রতিনিধিত্ব করুক।
উল্লেখ্য, আরাকান আর্মি হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সদস্য নিয়ে গঠিত সশস্ত্র দল।
সংঘর্ষপূর্ণ রাখাইন
মিয়ানমারের রাষ্ট্র পরিচালিত পত্রিকা গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমার বুধবার বলেছে, মঙ্গলবার (১ জানুয়ারি) সায়তায়ুং গ্রামে সীমান্তরক্ষী পুলিশ বাহিনীর ওপর ছোট ও ভারী অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ৩০ ব্যক্তির একটি দল। হামলায় এক পুলিশকর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়।
আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা জানিয়েছে, দলটির সদস্যরা সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সায়তায়ুং’এ মঙ্গলবার সংঘর্ষ করেছে। তবে তারা সীমান্তরক্ষী পুলিশ বাহিনীর ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোন মন্তব্য করেনি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এই অভিযানে অঙ্গরাজ্যটি থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ৭ লাখ ৩০ হাজারের রোহিঙ্গা।
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও গণধর্ষন চালিয়েছে। তবে সামরিক বাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
সারাবাংলা/ আরএ