রাখাইনে বিদ্রোহীদের হামলায় ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত
৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৫১
।। সারাবাংলা ডেস্ক।।
ঢাকা: মিয়ানমারের রাখাইনে রাজ্যে সশস্ত্র জাতিগত বিদ্রোহীদের হামলায় দেশটির ১৩ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দেশটির স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে এ হামলা চালানো হয়।
ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, অন্তত সাড়ে তিনশ বিদ্রোহী রাখাইনের চারটি পুলিশ ফাঁড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায়। শুক্রবার দেশটির স্বাধীনতা দিবস উদযাপনকালে এ হামলা চালানো হয়।
গত কয়েকসপ্তাহ ধরে রাখাইনে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যটিতে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘাত জোরদার হয়েছে। আরাকান আর্মি রাখাইনের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে বিদ্রোহ করে আসছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর দফতর থেকে বলা হয়েছে, উত্তর রাখাইনের চারটি পুলিশ ফাঁড়িতে অন্তত সাড়ে তিনশ বিদ্রোহী হামলা চালায়।
হামলার সময় বিদ্রোহী গোলাবারুদ-অস্ত্রও লুট করেছে বলে সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
এদিকে আরাকান আর্মির পক্ষ থেকে এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়েছে, তাদের তিন সৈন্য নিহত হয়েছে। মিয়ানমার বাহিনীর হাতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন তুন রয়টার্সকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী অমসৃণ এলকার পুলিশ পোস্টে বিদ্রোহীরা হামলা করে। এই পুলিশ পোস্ট রয়েছে সেখানকার জাতীয় নৃগোষ্ঠীদের রক্ষার জন্য । সুতরাং আরাকান আর্মিদের তাদের আক্রমণ করা উচিত না। মিয়ানমারের নাগরিকরা ওই এলাকায় অধিকাংশ বৌদ্ধ জাতি গোষ্ঠীকে মুসিলমদের মত বিবেচনা করে না।
এদিকে আরাকান আর্মির মুখপাত্র থাইন থু খা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে হত্যাকান্ডের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিদ্রোহের পরবর্তীতে সাত ‘শত্রুর’ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’ পরে তিনি লড়াইয়ের সময় আটক ১২ নিরাপত্তাকর্মীকে বিদ্রোহীরা মুক্তি দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন। সম্প্রতি সপ্তাহে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক আরাকান আর্মির প্রতি অভিযানের জবাবে এই হামলা হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এই অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদেরও নিশানা বানানো হয়।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী গত মাসে উত্তর ও উত্তরপূর্বকোণে চার মাসের অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করে। এই এলাকায় একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী জাতিগত সায়ত্তশাসন দাবি করছে যদিও রাখাইন রাজ্য এই যুদ্ধ বিরতি অস্বীকার করে।
শুক্রবার দেশটি যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতার ৭১ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। এর পরই আক্রমণ শুরু হয়। কিন্তু আরাকান আর্মির মুখপাত্র বর্ষপূর্তি ও হামলার মধ্যে কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি করেছেন। থাইন তু খা বলেন, ‘আমরা এখনও স্বাধীন নই। আজকে আমাদের স্বাধীনতা দিবস না।’
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে গণহত্যা ও রোহিঙ্গাদের ধর্ষণের জন্য দায়ী করা হয়। গণহত্যার উদ্দেশ্যে করা এই হামলা প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পলায়ন করে। যদিও মিয়ানমার এই দোষ অস্বীকার করেছে। মুসলিম বিদ্রোহীদের নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার প্রতিবাদে তারা পাল্টা হামলা শুরু করে বলে দাবি করে সেনাবাহিনী।
সারাবাংলা/একে/কেকে