বাসচাপায় ২ নারী শ্রমিকের মৃত্যু, লাইসেন্স নেই চালকের
৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:৪০ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:০৭
।। উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় সড়কে বাসচাপায় দুই নারী পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় খুব শিগগিরই চার্জশিট দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক ফারুক খান। শনিবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় হাতিরঝিল থানায় গিয়ে দেখা যায়, সেদিনের ঘটনায় আটক বাসটি থানার পাশে মধুবাগ বালুর মাঠে রাখা হয়েছে। বাসটির দুই পাশে ও সামনের গ্লাস ভাঙা।
আরও পড়ুন: বাসচাপায় ২ পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু: মালিবাগে বাসে আগুন, ভাঙচুর
তদন্ত কর্মকর্তা ফারুক খান সারাবাংলাকে জানান, গাড়ির কাগজপত্র সব পাওয়া গেলেও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাইনি। জিজ্ঞাসাবাদের সময় চালক লাইসেন্সের ডেলিভারি স্লিপ থাকার কথা বললেও তা দেখাতে পারেনি।
আরও পড়ুন: ৫ ঘণ্টা পর স্বাভাবিক মালিবাগ-রামপুরা সড়কের যান চলাচল
ফারুক খান সারাবাংলাকে আরও বলেন, চালক জুনায়েদকে আদালতে তোলার সময় পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আবেদন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের তদন্ত শেষ হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে অন্তত ২০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। পোশাক শ্রমিক ছাড়াও আশেপাশের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে চালকের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ফারুক খান বলেন, ময়না তদন্ত রিপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে হাতে পাওয়ার কথা রয়েছে। আর তা পেলে খুব দ্রুত আদালতে এই মামলার চার্জশিট প্রদান করা হবে।
ঘটনার দিন রাতেই (১ জানুয়ারি) নিহত পলির মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেফতার হওয়া সুপ্রভাত পরিবহনের চালক মো. জুনায়েদকে বুধবার আদালতে নেওয়া হলে বিচারক শাহিনুর রহমান তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন, বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন :‘সুখের দেখা পাওয়ার আগেই প্রাণ গেলো!’
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল করিম বলেন, ‘নতুন আইনেই মামলা নেওয়া হয়েছে। তবে হত্যার ক্ষেত্রে সরাসরি ৩০২ ধারায় মামলা গ্রহণ করা হয়নি। তদন্তে যদি হত্যার আলামত পাওয়া যায় কিংবা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে, প্রমাণিত হয় তবে চার্জশিট প্রদানের সময় ৩০২ ধারা যুক্ত করা হবে। বাসের ওই চালক নিহত পোশাক শ্রমিকদের আগে থেকে চিনত কি-না, ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত কি-না তা এখনো প্রমাণিত না। তাই ৩০২ ধারায় সরাসরি মামলা নেওয়া হয়নি। ঘটনার তদন্ত শেষ হলে আদালতে চার্জশিট প্রদান করা হবে বলে জানান ওসি।’
এজাহার থেকে জানা যায়, বাস দুর্ঘটনায় নিহতের ঘটনায় ২৭৯, ৩০৪ (খ) এবং ৩৩৭ দণ্ডবিধিতে মামলা করা হয়েছে, যা দ্রুতগতিতে বেপরোয়াভবে গাড়ি চালিয়ে সামান্য আঘাতসহ মানুষকে মেরে ফেলার অপরাধ এবং তাচ্ছিল্যভাবে হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়।
উল্লেখ্য, গত ১ জানুয়ারি বেলা আড়াইটার দিকে মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় সুপ্রভাত পরিবহনের (ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯৬১৩) ওই বাসের চাপায় নিহত হন নাহিদা পারভীন পলি (১৯) ও মিম আক্তার (১৩) নামে দুই নারী পোশাক শ্রমিক। তারা দুজনই এমএইচ গার্মেন্টে কাজ করতেন। দুজনে মগবাজার পূর্ব নয়াটোলায় ভাড়া থাকতেন। দুই নারী পোশাক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় শ্রমিকরা সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে, ভাঙচুর করে শতাধিক গাড়ি। এদিন চারটি গাড়িতে আগুনও দেয় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
সারাবাংলা/ইউজে/জেডএফ