চট্টগ্রামে ট্রাফিক সার্জেন্টের ওপর হামলার অভিযোগ
৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:৫৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার এলাকায় দায়িত্বরত দু’জন ট্রাফিক সার্জেন্টের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৬ জানুয়ারি) দুপুরে নগরীর চকবাজার থানার অলি খাঁ মসজিদ মোড়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে কাগজপত্র তল্লাশির সময় এই ঘটনা ঘটেছে। হামলার শিকার দু’জন ট্রাফিক সার্জেন্ট হলেন, আরিফ হোসেন ও মো. সাইফুদ্দিন।
সার্জেন্ট আরিফ হোসেন সারাবাংলাকে জানান, অলি খাঁ মসজিদ মোড়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিক থেকে আসা মোটরসাইকেল চালককে থামাতে সংকেত দেন সাইফুদ্দিন। মোটরসাইকেলে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া এক ছাত্র ছিলেন। কাগজপত্রে দেখা যায়, তার গাড়ির ইন্স্যুরেন্স কার্ড, লাইসেন্স নেই।
সাইফুদ্দিন বিষয়টি আরিফ হোসেনকে জানানোর পর তিনি মামলা লিপিবদ্ধ করা শুরু করেন। এর মধ্যে ওই ছেলেটি সাইফুদ্দিনকে জানান, গাড়িটি তার বড় ভাইয়ের- কাগজপত্র আছে। ছেলেটি টেলিফোনে ছাত্রলীগ নেতা সুভাষ মল্লিক সবুজের সঙ্গে কথা বলেন এবং সাইফুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন। অদূরে মামলা নথিভুক্ত করতে ব্যস্ত থাকায় আরিফ হোসেন বিষয়টি জানতেন না। মামলা প্রস্তুত করে ছেলেটিকে ডেকে কাগজ বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আকস্মিকভাবে সবুজের নেতৃত্বে ১৫-১৬ জন তরুণ আরিফের হাত থেকে সেই কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এ সময় তারা মামলা লিপিবদ্ধ করার সরকারি বইটিও ছিঁড়ে ফেলে। তারা দুই সার্জেন্টের ওপর চড়াও হয় এবং লাঞ্ছিত করে।
ঘটনাটি দেখে পাশেই চায়ের দোকানে বসা কয়েকজন এসে দুই সার্জেন্টকে দোকানের ভেতরে টেনে নিয়ে যান। তখন সবুজের সঙ্গে আসা ছেলেরা মোটরসাইকেল নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের ক্যাম্পাসের দিকে চলে যায়।
এই ঘটনার পর নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে চকবাজার থানায় গিয়ে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন সার্জেন্ট আরিফ হোসেন।
জানতে চাইলে চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, “দু’জন ট্রাফিক সার্জেন্টের সঙ্গে চট্টগ্রাম কলেজের কয়েকজন ছাত্রের সামান্য হাতাহাতি হয়েছিল। শুনেছি পরে আবার তারা মাফ চেয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি।”
এই প্রসঙ্গে সুভাষ মল্লিক সবুজ সারাবাংলাকে বলেন, “আমার সঙ্গে যখন টেলিফোনে কথা বলছিল, তখন হঠাৎ একজন পুলিশ অফিসার মন্তব্য করেন- আগে শিবির করত, এখন ছাত্রলীগ। এই ধরনের কথা শোনার পর আমি আর মাথা ঠিক রাখতে পারিনি। ছোট ভাইদের নিয়ে তখন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এ সময় সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। পরে আমরা সরি বলেছি।”
নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (উত্তর) হারুনুর রশীদ হাজারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
সারাবাংলা/আরডি/এটি