যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক গ্রেফতার
৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১৬:৩০
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাসহ একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে। খবর আল জাজিরার।
গ্রেফতারকৃতের নাম মোহাম্মদ জুবায়ের মনির (৬২)। গত ১৯ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের এক গ্রামে অবস্থিত নিজ বাসভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কেরানিগঞ্জ কারাগারে আটক রয়েছেন।
সরকারি নথিপত্র অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধের সময় মনিরের বয়স ছিল ১৩ বছর। তার পরিবারের দাবি মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের মধ্যে বেশিরভাগ সময় তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করেছিলেন।
মনিরের পরিবারের দাবি, গত মাসে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) এক প্রার্থীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মনিরের পারিবারিক আইনজীবী জ্যাসন এমার্ট বলেন, মনিরকে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচনি বিশৃঙ্খলার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এমার্ট বলেন, জুবায়ের নির্দোষ। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে ছেড়ে দিতে হবে। তার এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গ্রেফতার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করেছে।
মনিরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) শুনানি করা হবে।এখন পর্যন্ত আইসিটি ৭৫ জন ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। এর মধ্যে ৫৩ জনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
তদন্ত প্রায় শেষ
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী জিয়াদ আল মালুম আল জাজিরাকে বলেছেন, মনিরের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় সুনামগঞ্জের শালা ও দেরারি অঞ্চলে হত্যা, কারারোধ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে।
জিয়াদ বলেন, তিনি রাজাকার বাহিনীর একজন সদস্য ছিলেন।
মনিরের পরিবারের অভিযোগ অস্বীকার করে জিয়াদ বলেন, আমরা আইন ও যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে বিচারকার্য পরিচালনা করি। কেবল রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার জেরে কাউকে অভিযুক্ত করা হয় না। কিন্তু যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় অপরাধ করেছে তাদের বিচার হবে। এক্ষেত্রে তাদের রাজনৈতিক বিশ্বাস যাইহোক না কেন, তা বিবেচনা করা হবে না।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত প্রায় শেষ। আমরা সংগৃহীত তথ্য যাচাই করছি।
মনিরের মেয়ে শ্রাবন মনির আল জাজিরাকে জানান, তারা বাবা একজন ছোটখাটো ব্যবসায়ী। তিনি ১৯৮২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। ১৯৯১ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পান।
শ্রাবন জানান, নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে তার বাবার দু’টি দোকান রয়েছ। তিনি সেখানেই বাস করেন। সেখানে তার দু’টি সংস্থা রয়েছে। এসবের পাশাপাশি বাংলাদেশেও চালের কারখানা, মাছের খামার ও একটি অফিস ব্লকসহ কিছু ব্যবসা রয়েছে তার।
শ্রাবন বলেন, তার বাবা গত বছরের ১৮ নভেম্বর নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে আসেন। ৭ জানুয়ারি তার সেখানে ফেরত যাওয়ার কথা ছিল।
এদিকে, সরকারি কাগজপত্র অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় মনিরের বয়স ছিল ১৩ বছর। শ্রাবণ এ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ১৩ বছর বয়সে তিনি কিভাবে এসব যুদ্ধাপরাধ করতে পারেন?
সারাবাংলা/ আরএ