Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘হাতজোড় করে বলছি, আমার ভাই চাঁদাবাজ না’


৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:২০

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী বাজারে নিহত সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. মহিউদ্দিন সোহেলের মৃত্যু গণপিটুনিতে নয়- পরিকল্পিত হত্যা ছিল বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন তার পরিবারের সদস্যরা এবং রাজনৈতিক সতীর্থরা। মহিউদ্দিন সোহেলকে গণমাধ্যমে ‘চাঁদাবাজ’ উল্লেখ করায় প্রতিবাদ জানান তারা।

মহিউদ্দিন সোহেলের ছোট ভাই শাকিরুল ইসলাম শিশির বলেন, ‘আমার ভাই চাঁদাবাজ না। আপনাদের লেখার কারণে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছি, সেটা একবার ভেবে দেখুন। হাতজোড় করে বলছি, আমার ভাই চাঁদাবাজ নয়।’

এ সময় মহিউদ্দিন সোহেলের মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান ও বোনদের কান্নায় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর আগে সোমবার (৭ জানুয়ারি) সকালে নগরীর ডবলমুরিং থানার পাহাড়তলী বাজারে মহিউদ্দিন সোহেলের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পুলিশ ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায়ী ও জনতা মহিউদ্দিন সোহেলকে গণপিটুনি দেওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ সময় বাজারের অসংখ্য ব্যবসায়ী বিভিন্ন গণমাধ্যমের কাছে মহিউদ্দিন সোহেলের চাঁদাবাজি এবং রেলওয়ের জায়গা দখল করে অফিস বানানোর অভিযোগ তুলে ধরেন।

শিশির বলেন, একজন সাংবাদিকের মনেও কি এই প্রশ্নের উদ্রেক ঘটেনি যে, গণপিটুনিতে নিহত মহিউদ্দিন সোহেলের গায়ে ২৬টি ছুরির আঘাত কেন? আমার ভাই রেলের কোনো জায়গা দখল করেনি। সে রেলওয়ের কাছ থেকে জায়গা লিজ নিয়েছিল। সে অবৈধ দখলদার না।

মহিউদ্দিন সোহেল চাঁদাবাজ কিংবা সন্ত্রাসী ছিলেন না। তার পারিবারিক ঐতিহ্য আছে। তার সাংগঠনিক ভিত্তি ছিল। তিনি বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার ছিলেন, বলেন শিশির।

বিজ্ঞাপন

মহিউদ্দিন সোহেল তার জন্মস্থান পাহাড়তলীকে ‘সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত’ করার কাজে হাত দিয়েছিল- দাবি করে শিশির বলেন, “স্থানীয় কাউন্সিলর সাবের সওদাগরের নেতৃত্বে-কর্তৃত্বে ও সাবেক জামায়াত নেতা, বর্তমানে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতা ওসমান খানের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা অনৈতিক ব্যবসার আখড়া ভেঙে দিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর জন্য জানাজা ও নামাজের মাঠ করে দিয়েছিল। এতে মহিউদ্দিন সোহেল স্থানীয় ভূমিদস্যু, মাদক ও অনৈতিক ব্যবসায়ীদের রোষানলে পড়ে।”

সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিনের বন্ধু ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাত হোসেন বলেন, “নির্বাচনের দুইদিন আগে মহিউদ্দিন সোহেল আমাকে তার অফিসে ডেকে নিয়েছিল। তখন সে আমাকে বলেছিল, তার অফিস ও আশপাশের এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করতে। এত ক্যামেরার দরকার কী জানতে চাইলে সে বলে- তাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে। কাউন্সিলর সাবের সওদাগর তাকে মেরে ফেলবে। এজন্য সে সিসি ক্যামেরা বসাতে চায়।”

স্থানীয় ডবলমুরিং থানার দু’জন উপ-পরিদর্শকও মহিউদ্দিন সোহেলের অফিসে গিয়ে তার জীবননাশের চক্রান্ত হচ্ছে জানিয়ে সতর্ক থাকতে বলেছিলেন- দাবি করেন সাজ্জাত হোসেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, মহিউদ্দিন সোহেল চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নেতা এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ছিলেন। তিনি একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটিরও নেতা ছিলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন মহিউদ্দিন সোহেলের বাবা আব্দুল বারেক, মা ফিরোজা বেগম, স্ত্রী নিগার সুলতানা, ১২ বছর বয়সী ছেলে ফাইয়াজ তাজওয়ার মাশরিফ ও ৬ মাসের ছেলে আয়ান তাজওয়ার মাহাদি এবং বোন রাজিয়া সুলতানা। আরও ছিলেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক ফাহিম খান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জসিম উদ্দিন এবং একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির নেতা শওকত বাঙালি।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/এটি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দু’দিনে ভারতে ৯৯ টন ইলিশ রফতানি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৪

সম্পর্কিত খবর