Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পদ্মাসেতুর অগ্রগতি ছবিতে ছবিতে


৯ জানুয়ারি ২০১৯ ১৯:১৬

সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে প্রমত্তা পদ্মার বুকজুড়ে দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মাসেতু। মূল সেতু নির্মাণের কাজ ৭২ শতাংশ আর পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৬২ শতাংশ এছাড়া নদীশাসনের কাজ হয়েছে ৪৮ শতাংশ। বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা এই নদীকে নিয়ন্ত্রণে রেখে সেতু নির্মাণ নিঃসন্দেহে দুরূহ কাজ। আমেরিকা, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তির সমন্বয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মাসেতু। নির্মাণকাজের বিভিন্ন পর্যায়ের ছবি তুলেছেন সারাবাংলার স্পেশাল ফটো করেসপন্ডেন্ট আশীষ সেনগুপ্ত   

বিজ্ঞাপন

পদ্মা পাড়ে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে তৈরি করা হয়েছে পাইল ও স্প্যান ফেব্রিকেশন ইয়ার্ড (ওয়ার্কশপ)। যেখানে প্রস্তুত হচ্ছে সেতুর একের পর এক পাইল ও স্প্যান। এই ইয়ার্ডের আয়তন ৩০০ একর।

লেজার দিয়ে কাটা হচ্ছে ইস্পাত। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত সে মেশিন একের পর এক খাঁজ কেটে যাচ্ছে নির্দিষ্ট ব্যবধানে।

ওয়ার্কশপে দেখা গেলো, একসঙ্গে এগুচ্ছে পাইল ও স্প্যান তৈরির কাজ।

সব কাজই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অত্যাধুনিক মেশিনে সম্পন্ন হচ্ছে। ওয়ার্কশপে সে অর্থে শ্রমিক নেই বললে চলে।

এখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে রিমোট কন্ট্রোল পদ্ধতিতে ভারী বস্তু ওঠানো-নামানো হয়।

জানা গেছে, পদ্মাসেতু নির্মাণে যে ওয়ার্কশপ ব্যবহৃত হচ্ছে, সেটিও বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্মাণ ওয়ার্কশপ। এর আগে কোনো সেতু তৈরিতে এত বড় কর্মযজ্ঞের প্রয়োজন হয়নি।

 

যেখানে লম্বায় ১২০ থেকে ১৩০ মিটার আর ১০ ফুট ব্যাসের লোহার বিশেষ খাঁজকাটা কাঠামোর মধ্য দিয়ে সিমেন্ট ও কংক্রিটের মিশ্রণ পদ্মার তলদেশে পাঠানো হচ্ছে। এই মিশ্রণ পদ্মার কাদামাটির সঙ্গে যুদ্ধ করে শক্ত-স্থায়ী কাঠামোতে পরিণত নিচ্ছে।

প্রথমে একেকটি খুঁটির নিচে ৬টি করে পাইলিং করার কথা থাকলেও পরিবর্তিত নকশা অনুযায়ী, ১১টি খুঁটির প্রতিটির নিচে ৭টি করে পাইলিং হবে। পদ্মাসেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, খাঁজকাটা ধরনের বিশেষ টেকনোলজির আদলে গড়া হচ্ছে ওই ১১টি খুঁটির নিচের পাইলিং।

১১টির মধ্যে ৯টি খুঁটির নিচের পাইলিং নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী ১৪ জানুয়ারি বাকি ২টি খুঁটির নিচের পাইলিংয়ের নকশা চূড়ান্ত হবে।

বিজ্ঞাপন

পদ্মার তলদেশে ১১৩ মিটার থেকে ১৫০ মিটার পর্যন্ত অনুসন্ধান করেও কাদামাটির স্তরের শেষ দেখা না পাওয়ায় নকশায় পরিবর্তন আনা হয়।

এতে ১১টি খুঁটির নিচের পাইলিংয়ের গভীরতা গড়ে ১০৪ মিটার করা হচ্ছে।

পদ্মাসেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে ১১টির পাইলিং (গাঁথুনি) স্থাপন করা যাচ্ছিল না। অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আমেরিকা, জার্মানি, নেদারল্যান্ডসসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রযুক্তির সমন্বয়ে ওই খুঁটিগুলোর নিচের কাঁদামাটি বশে এনেছেন প্রকৌশলীরা।

এছাড়া মাওয়া অংশে পিয়ার ২ ও পিয়ার ৩ পুরোপুরি প্রস্তুত। তাতে দুটি স্প্যান বসানো হলে এই অংশে ৪৫০ মিটার পর্যন্ত আকার পাবে সেতু।

কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, এরই মধ্যে জাজিরা অংশে পিলার-৩৬ পুরোপুরি প্রস্তুত। সে অংশে একটি স্প্যান বসালে সেপথেই টানা ৯০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে সেতু।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ স্বপ্নের এই সেতু তৈরি করতে গিয়ে বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের।

প্রথম পাটাতন দিয়ে চলে যাবে সড়ক পথ। নিচে দ্বিতীয় পাটাতনে বসছে রেল লাইনের স্ল্যাব। সেখানে ধুন্ধুমার কাজ চলছে। শ্রমিকরা জানালেন ১১২টি স্ল্যাব এরইমধ্যে বসে গেছে।

সারাবাংলা/এএসজি/এমআই

পদ্মাসেতু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর