পরীক্ষা না দিয়ে বেরোবির মেধাতালিকায় ৭ শিক্ষার্থী
৯ জানুয়ারি ২০১৯ ২৩:১৭
।। রাব্বী হাসান সবুজ, বেরোবি করেসপন্ডেন্ট।।
রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) ১ম বর্ষের সাক্ষাৎকার দিতে এসে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে (বি ইউনিট) মেধাক্রম ১ম, ২য় ও ৩য়সহ অন্যান্য অনুষদের বিভিন্ন শিফটে ৭ শিক্ষার্থীকে জালিয়াতির অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছয়টি অনুষদের সাক্ষাৎকার চলাকালীন সামাজিক অনুষদ (বি ইউনিট) এবং জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদে (এফ ইউনিট) বিভিন্ন শিফটের বোর্ডের সমন্বয়ক তাদের প্রক্টরিয়াল বডির মাধ্যমে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে (বি ইউনিট) মেধাক্রম ১ম, ২য় ও ৩য় আটককৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, নীলফামারী কিশোরগঞ্জের মারুফ হাসান নিথেল (ইউনিট- বি, শিফট-৪র্থ, রোল- ২৭১১৮৯, মেধাক্রম ১, প্রাপ্ত নম্বর ৭২.৭৮), গাজীপুর শ্রীপুরের রাকিবুল ইসলাম শান্ত (ইউনিট- বি, শিফট-২য়, রোল- ২১১৯৮৬, মেধাক্রম ২, প্রাপ্ত নম্বর ৭২.৮৭৫), গাজীপুর কাপাশিয়ার হাবিবুর রহমানের ছেলে এস.এম নাইম (ইউনিট- বি, শিফট ২য়, রোল- ২১৯৮৪৬, মেধাক্রম ৩, প্রাপ্ত নম্বর ৭২.৩২৫)।
এছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের (বি ইউনিট) আটক হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন, টাঙ্গাইল সদরের শোয়েব হাসান (ইউনিট- বি, শিফট-৪র্থ, রোল- ২৪৬৮৫০, মেধাক্রম ৬, প্রাপ্ত নম্বর ৬৯.৬৫৫), টাঙ্গাইলের গোডাউন বাজারের শাহরিয়ার ইসলাম সম্পদ (ইউনিট- বি, শিফট-২য়, রোল- ২২০২০০, মেধাক্রম ৯, প্রাপ্ত নম্বর ৬৭.৮), শেরপুরের মধ্য শ্রেরীর রাহাত মজুমদার রাফি (ইউনিট- বি, শিফট-৪র্থ, রোল- ২৪৭৬৬০, মেধাক্রম ৩৮, প্রাপ্ত নম্বর ৬৩.৯৮৫)।
এদিকে জীব ও ভূ-বিজ্ঞান অনুষদে (এফ ইউনিট) ২য় স্থান অধিকার করা আটক হওয়া শিক্ষার্থী হলেন, ঠাকুরগাঁও’র গোয়ালপাড়ার খাইরুল আহমেদের ছেলে শাফিন আহমেদ (ইউনিট- এফ, শিফট-৪, রোল- ৬৭০৩৮৪, মেধাক্রম ২, প্রাপ্ত নম্বর ৬৬.০২)।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত সাতজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় সময় তারা কেউ অংশগ্রহণ করেনি। তাদের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের বদল প্রক্সির মাধ্যমে মূল এক্সপার্ট পরীক্ষা দেয়। এতে করে তারা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই মেধা তালিকার স্থান করে সাত নেয় শিক্ষার্থী।
আরও জানা যায়, সাক্ষাৎকারের সময় দায়িত্বরত শিক্ষকরা সাত শিক্ষার্থীর অসংলগ্ন প্রশ্নের উত্তর ও হাতের লেখা মিল না থাকায় তাদের জালিয়াত বলে প্রাথমিক স্তরে চিহ্নিত করে। পরে বি ইউনিটের ২য় শিফটের সমন্বয়ক খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম নিরব ৩ জন, ৪র্থ শিফটের (মানবিক) সমন্বয়ক তাবিউর রহমান প্রধান ২ জন, ৪র্থ শিফটের (ব্যবসায় শিক্ষা) সমন্বয়ক মো. দেলওয়ার হোসেন সবুজ ১ জন এবং এফ ইউনিটের ৪র্থ শিফটের সমন্বয়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান রিপন ১ জনকে ভর্তি জালিয়াতির দায়ে প্রক্টরিয়ার বডির হাতে হস্তান্তর করেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি ভ্রাম্যমাণ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের নির্দেশে ওই সাতজনকে তাজহাট থানায় পাঠান।
বি ইউনিটের ৪র্থ শিফটের (মানবিক) সমন্বয়ক তাবিউর রহমান প্রধান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার কক্ষে দুই শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় আসা কিছু প্রশ্ন করা হয়েছিল কিন্তু তারা উত্তর না দিয়ে অসংলগ্ন প্রশ্নের উত্তর ও হাতের লেখার অমিল থাকায় তাঁদের জালিয়াত বলে প্রাথমিক স্তরে চিহ্নিত করি পরে প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দিই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক একে.এম ফরিদ-উল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আটকেরা কেউই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেনি। তাদের সাক্ষাৎকার বাতিল করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
এসব জালিয়াতির পেছনে কারা আছে পুলিশকে তা খুঁজে বের করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন প্রক্টর।
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, পাবলিক পরীক্ষা আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
সারাবাংলা/একে