Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দালাল দৌরাত্ম্যে কক্সবাজার বিমুখ হচ্ছে পর্যটক


১০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৮:১১

।। ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

কক্সবাজার: বাস থেকে নামলেন এক যাত্রী। সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যরা। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে টানাটানি সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকদের। যাত্রী কে নিয়ে যাবেন, চালকদের সেই প্রতিযোগিতা গড়ায় হাতাহাতিতে।

কথা বলে জানা যায়, ওই যাত্রীর নাম সাইফুল ইসলাম। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন তিনি। থাকেন ঢাকায়। সাইফুল বলেন, বাস থেকে নেমেই এক বিব্রতকর পরিস্থিতি পড়েছি। রীতিমত টানা হেঁচড়া! সিএনজি চালকদের ধমক দিলেও কানে নেয় না। প্রশাসনের উচিৎ এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।

স্থানীয়রা জানালেন, বাসটার্মিনাল ও কলাতলী মোড়ে প্রতিদিনের চিত্র এটা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের এই ভোগান্তিতে পড়তেই হয়। অটোরিকশা চালকদের মধ্যে নিত্যদিন এই প্রতিযোগিতা চলে। যাত্রী পরিবহনের ভাড়া তো আছেই, হোটেলে নিয়ে গেলে মালিকদের কাছ থেকে পাওয়া যায় বাড়তি কমিশন- যে কারণে বেড়েছে এই প্রতিযোগিতা।

এ সময় একজন চালককে বলতে শোনা যায়, “মামা, রুম লাগবে? কম টাকায় অনেক ভালো রুম পাবেন। আমার সাথে আসেন। আমি সবচেয়ে ভালো রুম নিয়ে দেবো।”

স্থানীয়রা আরও জানান, পর্যটকরা এক জনের কাছ থেকে পার পেলে অন্যজনের পাল্লায় পড়ে। পছন্দসই থাকায় জায়গা কখনো পায়, কখনো পায় না। তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘ দিন এই অবস্থা চলে আসলেও প্রশাসনের ভূমিকা সন্তোষজনক না।

অনুসন্ধানে উঠে আসে, হোটেল এবং কটেজ মালিকদের ‍চুক্তি রয়েছে অটোরিকশা চালকদের। কমিশনের আশায় পর্যটকদের তারা হোটেল বা কটেজে নিয়ে যান। ওই হোটেল বা কটেজে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে সেসব তারাই জানান পর্যটকদের। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় তাদের কথার সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই। মান অনুযায়ী, হোটেল ভাড়াও গুনতে হয় বেশি।

বিজ্ঞাপন

এমনই অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আরেক পর্যটক হৃদয় খাঁন। তিনি বলেন, বন্ধুদের সঙ্গে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছেন তিনি। অটোরিকশা চালক তাকে হোটেলের রুম, খাবার সম্পর্কে যে বর্ণনা দিয়েছেন- বাস্তবে তার কিছুই নেই। সেন্টমার্টিন যাবেন জন্য সহযোগিতা চাওয়ায় হয়েছেন প্রতারিত।

এসব অভিযোগ সত্যি- বললেন কক্সবাজার কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহম্মেদ নোবেল। তিনি বলেন, কিছু অসাধু কটেজ ও হোটেল ব্যবসায়ীদের কারণে মৌসুমী দালালদের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। আবার তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন কিছু প্রভাবশালী মহল।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিক সম্পর্কে জানতে চাইলে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। এর আগেও দালালদের আটক করতে অভিযান চালানো হয়েছে। আমাদের অভিযান চলছে, চলবে।

সারাবাংলা/এটি/

কক্সবাজার পর্যটন শিল্প

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর