শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে কারখানা বন্ধের হুঁশিয়ারি বিজিএমইএ’র
১৩ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:২৪
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সোমবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে পোশাক শ্রমিকরা কাজে না ফিরলে মজুরি তো দেওয়া হবেই না বরং ওইসব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন -বিজিএমইএ।
রোববার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ ভবনে পোশাক শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সংগঠনটির সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
শ্রমিকদের উদ্দেশে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা কর্মস্থলে ফিরে যান, উৎপাদন কাজে অংশগ্রহণ করুন। আর যদি আগামীকাল থেকে কাজ না করেন, তাহলে আপনাদেরকে কোনো মজুরি প্রদান করা হবে না এবং ঐ কারখানা শ্রম আইনের ১৩/১ ধারা মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়বে, থাকবে আরও কিছু সুখবর
সিদ্ধান্তটির ব্যাপারে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘কাজ করলে তো কারখানা বন্ধের প্রয়োজন নেই। আজ যে সিদ্ধান্ত আসবে তা যদি তারা মেনে না নেয় তাহলে আমরা কাল থেকে কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবো।’
আন্দোলনে ক্ষতির বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলে, ‘একেক জনের লস একেক রকম। সবচেয়ে বড় লস ইমেজের। টাকার লস কোনো না কোনোভাবে পুষিয়ে নেয়া যায়। আমরা পুষিয়ে নিতে পারি। কিন্তু বহির্বিশ্বে ভাবমূর্তির যে ক্ষতি হয়, সেটাই বড় ক্ষতি। একবার ভাবমূর্তির ক্ষতি হলে সেটা পুষিয়ে নিতে দুই থেকে তিন বছর সময় লেগে যায়।’
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বলেছিলাম একটি মহল উসকানি দিচ্ছে। দুঃখের বিষয় হলো এখনও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। নতুন মজুরি কাঠামোতে বৈষম্য আছে বলে একটি মহল উসকানি দিচ্ছে। খাতটিকে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
পোশাক কারখানায় ভাঙচুরের অভিযোগে আটক ৫
তিনি বলেন, ‘সরকার গঠিত ত্রিপক্ষীয় কমিটি মজুরি কাঠামোর ৩, ৪ ও ৫ গ্রেডে যদি সমস্যা থাকে তবে তা সমন্বয় করা হবে, সেখানে সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, বেশি ছাড়া মজুরি কারো কমবে না। সবাইকে কাজে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, কিন্তু সেই আহ্বানকে অগ্রাহ্য করে তারা কারখানা ভাঙচুর করছে।’
বিজিএমইএ সভাপতি আরও বলেন, ‘মজুরি কাঠামো নিয়ে আন্দোলন করার যৌক্তিকতা নেই, এ বিষয়ে সরকার গঠিত ত্রিপক্ষীয় কমিটি কাজ করছে। আপনাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে একটি স্বার্থন্বেষী মহল আপনাদেরকে ব্যবহার করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে, যা মোটেও কাম্য নয়। আপনাদের সরলতার সুযোগে দেশের অর্থনীতির প্রাণ ও প্রধান কর্মসংস্থানের খাত নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলবে তা হতে দেবেন না। এই খাতটি ধ্বংস হলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনারা। আপনারা কর্মহীন হয়ে পড়বেন। আপনাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হতে পারে, এমন কোনো খাত এখনও গড়ে ওঠেনি।’
শিগগিরই সমস্যার সমাধান, শ্রমিকদের কাজে যাওয়ার আহবান
এক প্রশ্নের উত্তরে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নতুন কাঠামো অনুযায়ী বেতন দেয়া হচ্ছে। কিছু ব্যত্যয় হলে সেখানেও দেয়া হবে। তবে আমরা দেখেছি যেখানে নতুন ওয়েজ অনুযায়ী বেতন দেওয়া হয়েছে সেসব কারখানায় বেশি ভাংচুর করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম, সংসদ সদস্য সালাম মুর্শেদিসহ বিজিএমইএ’র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএমএন