জুলহাস-তনয় হত্যার ’কিলার টিমে’র সদস্য গ্রেফতার
১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:২৫
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : রাজধানীর কলাবাগানে সমকামী অধিকার কর্মী জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয়কে হত্যার ঘটনার মূল সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাউম ইউনিট (সিটিটিসি)।
বুধবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সিটিটিসি প্রধান মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, গ্রেফতার ব্যক্তির নাম আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল ওরফে ফয়সাল জাকির ওরফে সাদিক।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময়ে বলেছি যে আনসার আল ইসলামের একাধিক গ্রুপ থাকে। অর্থাৎ একটা থাকে অপারেশনাল গ্রুপ বা কিলার গ্রুপ, আরেকটা থাকে ইনটেল গ্রুপ যারা ইনটেলিজেন্স কালেকশন করে। আমরা এখন নিশ্চিত হয়েছি যে ওই দিন সাতজন উপস্থিত ছিল যার পাঁচজন ছিল কিলার গ্রুপের সদস্য এবং দুইজন ছিল ইনটেল গ্রুপের সদস্য। তো আমরা যে পাঁচজন কিলার গ্রুপের সদস্য হিসেবে ভেতরে প্রবেশ করেছিল সেকে।সত্রে আপনারা জানেন যে দারোয়ানকেও আহত করা হয়েছিল, দারোয়ানদের আটকে রেখেছিল তিনজন আর দুইজন ভেতরে ঢুকেছিল। এই পাঁচজনের দুইজনকে আমরা গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। তাদেরই একজন আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল ওরফে ফয়সাল জাকির ওরফে সাদিক। ইতোপূর্বে আমরা আরাফাত নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করেছিলাম। যে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে যে সেও এই পাঁচজনের একজন ছিল।‘
এছাড়া ইনটেল গ্রুপের জাবেদ ও সায়মন নামে দুইজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। অর্থাৎ এই ঘটনায় জড়িত মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন সরাসরি ওই্ ঘটনায় জড়িত ছিল।
মঙ্গলবার গ্রেফতার আসাদুল্লাহর সঙ্গে আরেকটি ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয় সামনে এসেছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। সেটি হলো ২০১৬ সালেই বাড্ডার সাঁতারকুলে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা। সেই ঘটনার সঙ্গে আসাদুল্লাহ ওরফে ফখরুল জড়িত ছিল। ওই সময় আহত পুলিশ কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যে এই ব্যক্তিই তাকে আঘাত করেছিল এবং তার সঙ্গে থাকা সরকারি অস্ত্রটি ছিনিয়ে নিয়েছিল।
আসাদুল্লাহকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে জানিয়ে সিটিটিসি প্রধান বলেন, রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর তার কাছ থেকে আরো তথ্য পাওয়া যাবে বলে তারা আশা করছেন।
২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে প্রবেশ করে ইউএসএইড কর্মকর্তা এবং সমকামি অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র মামলাটি দায়ের করেন।
নিহত জুলহাজ বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল কর্মকর্তা ছিলেন। হত্যাকাণ্ডের আগে ‘রূপবান’ সম্পাদনার পাশাপাশি জুলহাজ উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডিতে কাজ করতেন।
সারাবাংলা/এসএমএন