Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

একজন ইউপি সদস্যের এমন কাজ নিন্দনীয়: হাইকোর্ট


২১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৩:৪৯

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: মুরগি চুরির অভিযোগে ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের রুবেলকে (১৪) বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সোমবার (২১ জানুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

এসময় আদালত বলেছেন, একজন নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছ থেকে এমন আচরণ দুঃখজনক। এটি বহির্বিশ্বে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। পরে আদালত আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা জানাতে একজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছরের ১৫ নভেম্বর ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার হাজারীগঞ্জে মুরগি চুরির অপবাদে রুবেল (১৪) নামের এক কিশোরকে নির্যাতন করে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমজাদ।

এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সোমবার ‘মানুষ এত নিষ্ঠুর হয়! চরফ্যাসনে কিশোরকে নির্মম নির্যাতন’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে প্রকাশিত ওই সংবাদ আদালতে নজরে আনেন আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।

আদালত সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত করে এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোলার চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নে মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আমজাদের নেতৃত্বে রুবেল (১৪) নামের এক কিশোরকে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিজ্ঞাপন

গত ১৫ নভেম্বর এই ঘটনা ঘটলেও নির্যাতনকারীদের হুমকি আর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ওই কিশোরের পরিবার মামলা করতে পারেনি। তবে নির্যাতনের দৃশ্য ফেসবুকে ভাইরাল হলে ঘটনার একমাসের বেশি সময় পর শনিবার পুলিশ ওই কিশোরের মাকে ডেকে নেয়। পরে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর আমজাদ হোসেনসহ ৬ জনকে আসামি করে শশীভূষণ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

নির্যাতিত রুবেলের মা বিলকিছ বেগম বলেন, রুবেল জেলে নৌকার বাবুর্চি। ঘটনার আগের দিন বনভোজন খাওয়ার জন্য রুবেলসহ বেশ কয়েকজন মুরগি কিনে আনে। সেই মুরগি চুরি করে আনা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন স্থানীয় মেম্বার। পরে ১৫ নভেম্বর মুরগি চুরির অপবাদ দিয়ে মেম্বার বাড়ি থেকে রুবেলকে ডেকে নিয়ে ৭নং ওয়ার্ডের হাজারীগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গ্রামবাসীর সামনে বেঁধে মারধর করেন।

তিনি জানান, একদিকে রুবেলকে পেটানো হয়, অন্যদিকে টাকার জন্য তার কাছে খবর পাঠানো হয়। পরে তিনি স্থানীয় চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদারের কাছে গেলে মেম্বারকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার কথা বলেন। পরে নিরুপায় হয়ে বিলকিছ বেগম নাকফুল আর গলার গহনা বন্ধক রেখে ৫ হাজার টাকা এনে মেম্বার আমাজাদ হোসেনকে দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নেন।

বিলকিছ বেগম বলেন, ঘটনার পর অর্থাভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারিনি। এছাড়া মেম্বারের হুমকির কারণে মামলাও করতে যাইনি। পরে থানায় ডেকে নিয়ে মেম্বারসহ ছয়জনকে আসামি করে মামলা নেয়।

এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত মেম্বার আমজাদ হোসেন বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি মুরগি চুরির কঠিন বিচার করেছি। বিচার করতে গেলে একটু আধটু মারধর করতেই হয়।

বিজ্ঞাপন

তবে চেয়ারম্যান সেলিম হাওলাদার দাবি করেন, ঘটনা প্রসেঙ্গ তিনি কিছুই জানতেন না। নির্যাতনের পর রুবেলের মা তাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/এমআই

হাইকোর্ট

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর