মধুর ক্যান্টিনে আসতে চায় ছাত্রদল, আপত্তি নেই ছাত্রলীগের
২১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:০৪
।। কবির কানন, ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সহাবস্থানের অংশ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনে এসে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাতে চায় বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কোনো আপত্তি নেই। ছাত্রলীগ জানিয়েছে, বৈধ ছাত্রদের সহাবস্থানের বিষয়ে ছাত্রলীগ একমত।
সোমবার (২১) জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন ভার্চুয়াল ক্লাস রুমে ডাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি সংশোধনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ১৩টি ছাত্র সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে। দীর্ঘ চার ঘণ্টা বৈঠক শেষে বের হয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান বলেন, ‘আমরা এখানে যেমন সহাবস্থান আছে তেমনভাবে মধুর ক্যান্টিন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে সহাবস্থান কার্যকর করার পর তফসিলের দাবি জানিয়েছি। অন্যান্য সংগঠনও সহাবস্থানের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে যারা হল ও কেন্দ্রীয় সংসদে ফি প্রদান করে তাদের সবার ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছি। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ভোটার ও প্রার্থী হতে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। আমরা কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানিয়েছি।’
আকরামুল হাসান আরও বলেন, ‘নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য ভোটকেন্দ্র ও আশেপাশের জায়গায় সিসিটিভি লাগানোর দাবি জানিয়েছি এবং গঠনতন্ত্রে ডাকসুর সভাপতি (ভিসি) একচেটিয়া ও অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে।’
ছাত্রদলের সহাবস্থানকে কেন্দ্র করে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ হোক সেটা তারা চান না উল্লেখ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগ তাদের কর্মীদের সঙ্গে সময় নিয়ে কথা বলে সহাবস্থানের পরিবেশ নিশ্চিত করুক।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘ছাত্রদল সর্বশেষ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যাম্পাস ছেড়েছে তাদের অন্তর্কোন্দলে। অতীতে তাদের কর্মকাণ্ড বাদ দিয়ে ইতিবাচক ধারায় তারা আসুক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। প্রতিটি হলে ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী রয়েছে। বাকিরা অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রী। প্রতিটি হলে প্রভোস্টদের কর্তৃত্ব রয়েছে। ছাত্রদল তাদের নেতাকর্মীদের লিস্ট প্রশাসনকে দিক আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’
গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘সিনিয়র শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন হয়। এখানে মিডিয়ার ফোকাস রয়েছে ম্যানিপিউলেট করার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন সুষ্ঠু করার সকল পদক্ষেপ কর্তৃপক্ষ নিক আমরা সাহায্য করব।’
বয়সের বিষয়ে ছাত্রলীগ নিয়মিত ছাত্রদের প্রার্থী ও ভোটার হওয়ার দাবি জানিয়েছেন বলে জানান গোলাম রাব্বানী।
এদিকে বৈঠকের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আচরণবিধি ও গঠনতন্ত্র সংশোধনের জন্য বৈঠক ছিল। প্রক্টর ও অন্যরা বিভিন্ন দিক থেকে আসা দাবিগুলো লিখেছে। সকল বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে সিন্ডিকেটে।’
কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা হবে এমন প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘কাজের পরিধি মূল্যায়ন না করে বলা যাচ্ছে না।’ যারা ভোটার হবে তারা প্রার্থী হতে পারবেন এ বিষয়ে সকলে একমত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সারাবাংলা/কেকে/একে
আরও পড়ুন
ডাকসু নির্বাচনের জন্য সাধ্যমত চেষ্টা করব: উপাচার্য
ডাকসু নির্বাচনের জন্য ১৫ সদস্যের কমিটি
ডাকসু নির্বাচন হতে বাধা নেই: আপিল বিভাগ
ডাকসু নির্বাচন: ঢাবি শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ
জাতীয় নির্বাচনের পরেই ডাকসু নির্বাচন: অ্যাটর্নি জেনারেল
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষ তামাশা করছে
গভীরভাবে অনুভব করছি ডাকসু নির্বাচন দরকার