Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মানিলন্ডারিং মামলায় ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান কারাগারে


৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ১৫:৫১

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৯১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম এ আদেশ দেন।

এদিন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন আসামিকে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবী রেজাউল করিম, ইমরুল কায়েসসহ আরও অনেকেই জামিন চেয়ে শুনানি করেন।

অপরদিকে, মহানগর পাবলিক প্রসিকিউশন আবু আব্দুল্লাহ জামিনের বিরোধিতা করেন।

এর আগে, এদিন বেলা পৌনে ২টার দিকে শুল্ক গোয়েন্দা তদন্ত অধিদফতরের কর্মকর্তা এ আসামিকে ঢাকা সিএসএম আদালতে হাজির করে আদালতের হাজতখানায় রাখেন। সেখানে থাকাবস্থায়ই আদালতে তার জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরবর্তীতে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে উল্লেখ করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করা হয়। অপর ২ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

জনতা ব্যাংকের এই অর্থপাচারের ঘটনা তদন্তের জন্যই গত বুধবার বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের সদর দফতরে তাকে ডাকা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তাকে গ্রেফতার দেখানোর কথা জানানো হয়। পরে সন্ধ্যায় এমএ কাদেরসহ ১৭ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার মডেল থানায় মানি লন্ডারিং আইনে পৃথক ৩টি মামলা করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

মামলার এজাহারে, ক্রিসেন্ট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস, ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ এবং রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের নামে ৯১৯ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আনা হয়। এমএ কাদের ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজের চেয়ারম্যান।

মামলায় জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা, চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আব্দুল আজিজসহ মোট ১৭ জনকে আসামি করা হয়। আব্দুল আজিজ সম্পর্কে এমএ কাদেরের ভাই। তিনি রিমেক্স ফুটওয়্যারের চেয়ারম্যান।

উল্লেখ্য, এ মামলার অন্যতম আসামি ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ কাদেরকে গতকাল (৩০ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় কাকরাইল থেকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর গ্রেফতার করে।

সূত্র জানায়, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর কর্তৃক বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের বিষয়ে অনুসন্ধান সম্পন্ন হয়েছে। এরমধ্যে ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড ৪২২ কোটি ৪৬ লাখ, রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেড ৪৮১ কোটি ২৬ লাখ এবং ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ লিমিটেড ১৫ কোটি ৮৪ লাখ মোট ৯১৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই অপরাধে রাজধানীর চকবাজার থানায় ১৭ জনকে আসামি করে তিনটি মামলা দায়ের করেছে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ।

এছাড়া, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর কর্তৃক মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত ২০১৫) অনুযায়ী রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস লিটুল জাহান (মিরা) এবং অন্য দুটি প্রতিষ্ঠান ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড ও ক্রিসেন্ট ট্যানারিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ কাদের এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিসেস সুলতানা বেগম (মনি) ও জনতা ব্যাংক লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট ১৩ জন কর্মকর্তাকে আসামি করে চকবাজার মডেল থানায় মামলা করা হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে জনতা ব্যাংক লিমিটেড ইমামগঞ্জ করপোরেট শাখা থেকে রফতানি বিল ক্রয় করা হয়েছে। কিন্তু চার মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসিত হয়নি এরূপ বিলের সংখ্যা ২১৫টি, জড়িত অর্থের পরিমাণ ৪২৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পরবর্তী সাত মাসে অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ পর্যন্ত ২১৫টি বিলের মধ্যে মাত্র তিনটি বিলের বিপরীতে ৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা প্রত্যাবাসিত হয়েছে। অতএব, অদ্যাবধি ২১২টি বিলের বিপরীতে ৪২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা অপ্রত্যাবাসিত রয়েছে।

সারাবাংলা/এআই/এমও


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর