যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চাইলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:৪৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মসীকৃত খুনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে থাকা রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল বরার্ট মিলার বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে এ সময় রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত চান তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। তাকে বলেছি, বঙ্গবন্ধুর আত্মসীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছেন। বাংলাদেশের আদালতে তার বিচার শেষ হয়েছেন। রাশেদ চৌধুরী যে অপরাধ করেছেন, তা আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া রাশেদ চৌধুরী যে বঙ্গবন্ধুকে খুন করেছেন, সেটা তিনি নিজেও স্বীকার করেছেন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই খুনিকে ফেরত চেয়েছি। ফেরতের বিষয়ে রাষ্ট্রদূত ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তাদের মূল কার্যালয়ে এই বিষয়ে অনুরোধ জানাবেন।’
জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় দণ্ড পাওয়া ১২ জনের মধ্যে পলাতক ৬ জন আসামি বিভিন্ন দেশে পলাতক রয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে রাশেদ চৌধুরী, কানাডায় নুর চৌধুরী পলাতক আছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকার কাছে অস্ত্র-সরঞ্জাম বিক্রি করতে চায় ওয়াশিংটন
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বাকি ৪ জন পলাতক খুনির মধ্যে মোসলেম উদ্দিন জার্মানিতে, শরিফুল হক ডালিম স্পেনে, খন্দকার আবদুর রশিদ কখনো পাকিস্তানে, কখনো লিবিয়ার বেনগাজিতে এবং আব্দুল মাজেদ সেনেগালে অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোরে সেনাবাহিনীর একটি দল ওই সময়ের রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে খুনিরা। ওই ঘটনা ঘটানোর পর দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) আইন জারি করে দীর্ঘ ২১ বছর এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখা হয়। এরপর ১৯৯৬ সালে বর্তমান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দায়মুক্তি (ইনডেমনিটি) আইন বাতিল করা হয়। ওই বছরের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী আ ফ ম মহিতুল ইসলাম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আপিল বিভাগ থেকে গত ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর চূড়ান্ত রায়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার অভিযোগে ১২ জনকে ফাসির দণ্ড দেওয়া হয়। গত ২০১০ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে ১২ জনের মধ্যে ৫ জনের ফাসি কার্যকর হয়। তারা হলেন সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দিন আহমদ (আর্টিলারি), বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (ল্যান্সার)।
আরেক দণ্ড পাওয়া আসামি আজিজ পাশা গত ২০০১ সালের মাঝামাঝি জিম্বাবুয়েতে মারা যান। বাকি ৬ জন এখনো বিদেশে পলাতক।
সারাবাংলা/জেআইএল/এমএনএইচ