Sunday 15 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুরনো রূপে ফিরল তুতেনখামেনের সমাধি


২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:১৬ | আপডেট: ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:২৫
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। বিচিত্রা ডেস্ক ।।

মিশরের বালক রাজা তুতেনখামেনের সমাধিকে পুরনো রূপে ফিরিয়ে এনেছে গেটি কনজারভেশন ইনস্টিটিউট। দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে সমাধির দেয়ালগুলোর চিত্রকর্মে যেসব আঁচড় ও দাগ পড়েছিল, সেগুলো তুলে ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। এর জন্য সময় লেগেছে প্রায় ৯ বছর। একইসঙ্গে দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতেও যেন এই সমাধি অস্তিত্বের সংকটে না পড়ে, সেদিকটিও নিশ্চিত করা হয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, এই সমাধিতে প্রবেশ করা প্রতিটি ব্যক্তির নিঃশ্বাস থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের পাশাপাশি আর্দ্রতা ও ধূলা এই সমাধির চিত্রকর্মগুলোকে আক্রান্ত করেছে, পড়েছে দাগ ও আস্তরণ। সেগুলো পরিষ্কার করে তুলতেই গেটি কনজারভেশনের বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘ এই প্রকল্পে নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। নতুন করে যেন এসব চিত্রকর্ম ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য নতুন ধরনের ভেন্টিলেশন বা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে তুতেনখামেনের সমাধিতে।

বিজ্ঞাপন

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিত্রকর্মগুলোর সামনে নতুন দেয়াল তোলা হয়েছে, যেন এগুলো সরাসরি কোনোকিছুর সংস্পর্শে না আসে। তবে আগের চেয়েও আরও ভালোভাবে চিত্রকর্মগুলো দেখার সুযোগ করে দিতে নতুন আলোকসজ্জা স্থাপন করা হয়েছে। চিত্রকর্মগুলোতে প্রাচীন মিশরীয় হায়ারেগ্লিফিক রীতিতে লেখা বক্তব্যগুলো ব্যাখা করার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এতে করে দর্শনার্থীরা এর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবেন।

গেটি কনজারভেশনের বিশেষজ্ঞ সারা লারডিনয়েস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, আমরা এমন একটি ব্যবস্থা স্থাপন করতে চেয়েছিলাম যেটি টেকসই হবে। আমরা চেয়েছিলাম, এই ব্যবস্থা যেন প্রতিদিনই দর্শনার্থীদের চাপ সামলে নিতে পারে এবং এর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে সর্বনিম্ন প্রভাব পড়ে।

গবেষক দল জানায়, তুতেনখামেনের সমাধির দেয়ালের চিত্রকর্মগুলোতে বাদামি রঙের যেসব দাগ দেখা গিয়েছিল, সেগুলো মূলত অণুজীবঘটিত। তবে এসব অণুজীব অনেক আগেই মরে গিয়েছে এবং এ থেকে আর কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই। তবে বাদামি দাগগুলো চিত্রকর্মের ভেতরে প্রবেশ করেছিল বলে এগুলোকে তুলে ফেলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ হাওয়ার্ড কার্টার ও জর্জ হার্বাট ১৯২২ সালে লুক্সরের নিকটবর্তী ভ্যালে অব কিংসে তুতেনখামেনের সমাধির সন্ধান পান। নতুন ফারাও রাজত্বের সময়কার (খ্রিস্টপূর্ব ১৫৫০ থেকে খ্রিস্টপূর্ব ১০৬৯) যতগুলো সমাধির সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে তুতেনখামেনের এই সমাধিটিই কার্যত অক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই সমাধিতে প্রাপ্ত বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে ওই সময়কার সৎকার রীতি এবং চারু ও কারুশিল্প সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানা যায়।

তুতেনখামেনের সমাধিতে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের বেশিরভাগই কায়রোতে মিশরীয় অ্যান্টিক জাদুঘরে স্থানান্তর করা হয়েছে। তবে সমাধিতে এখনও রয়েছে তুতেনখামেনের মমি, মমি সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে বাইরে ব্যবহৃত কফিন ও শবাধার। এছাড়া সমাধির দেয়ালের চিত্রকর্মগুলো তো রয়েছেই।

সারাবাংলা/টিআর

তুতেনখামেন