অনুমোদনহীন কারখানায় নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে খাবার
৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১০:৩৪
।।রানা আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অনুমোদনহীন বেকারি কারখানায় নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন রকমারি খাবার। কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলার বারুহাস বাজারে বাড়ি ভেতরেই তৈরি করা হচ্ছে বিভিন্ন বেকারি পণ্য। আর এই সব খাবার যাচ্ছে পাড়া-মহল্লার বিভিন্ন দোকান থেকে শুরু করে নামিদামি বেকারিতে। বিক্রি হচ্ছে বিস্কুট, চানাচুর, কেক, পাউরুটি, সন্দেশসহ নানা বাহারি খাবার। কখনও কি কেউ ভেবে দেখেছেন এই খাবারগুলো কোথায় তৈরি হচ্ছে? কী দিয়ে তৈরি হচ্ছে? এসব খাদ্যপণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ ও যাচাই করার দায়িত্বে যারা আছেন তারা তাদের দায়িত্ব কতটা পালন করছেন? এক কথায় না।
সোমবার (২৮ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ খাদ্য তৈরির কারখানার নেই কোনো সরকারি অনুমোদন। খাবার দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোন বেকারির উৎপাদন।
এসব বেকারিতে মানা হয় না নিরাপদ খাদ্য তৈরির কোন নিয়ম। তৈরি করা খাবারে বসছে মশা-মাছি আর পোকা। আবার ধূলা বালি ও শ্রমিকের ঘাম। কারখানায় নেই স্যানিটেশন এবং অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। এমনকি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোড পর্যন্ত নেই। রয়েছে ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ, কেমিকেল ও একাধিক পাম ওয়েলের ড্রাম। আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ধরনের তৈরি পণ্য। ডালডা দিয়ে তৈরি করা ক্রিম রাখা পাত্রগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি ভনভন করছে। উৎপাদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ বাহারি মোড়কে বনরুটি, পাউরুটি, কেক, বিস্কুট, পুডিংসহ বিভিন্ন ধরনের বেকারি সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছে। তাড়াশ উপজেলায় এমন আরো প্রতিষ্ঠান আছে যাদের অবস্থাও এমন ধরনের।
ফজরের নামাজের পরই কোম্পানির ভ্যানে বিভিন্ন এলাকার পাড়া মহল্লায়, অলিগলির জেনারেল স্টোর ও চায়ের দোকানে ওই সব পণ্য পৌঁছে দেন ডেলিভারিম্যানরা। বিভিন্ন চায়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, বিকল্প বেকারির মোড়কে একাধিক পলি প্যাকেটে ঝুলছে পাইরুটি, বাটারবন, কেক, পেটিস, সিঙ্গাড়াসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য।
বারুহাস বাজারের একটি বেকারি কারখানার মালিক আব্দুল হামিদ জানান, তিনি কয়েকদিন যাবত এ কারখানা শুরু করেছে তাই পরিবেশ তৈরি করতে একটু সময় লাগবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেড লাইসেন্স ও সরকারি অনুমোদন নিতে সময়ের প্রয়োজন।
সিরাজগঞ্জ নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মাদ আলী জিন্নাহ বলেন, ‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বেকারি শিল্প-প্রতিষ্ঠান করতে প্রথমেই প্রয়োজন বিএসটিআই এর অনুমোদন। পাশাপাশি পরিবেশ, নিরাপদ খাদ্য, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও কলকারখানা অধিদপ্তরের অনুমোদন। এ আইন অমান্য করে যারা কারখানা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি আরো জানান অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ভেজাল খাদ্যের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহ্যত আছে। মানসম্মত খাবার তৈরি নিশ্চিত করতে অবৈধ বেকারিগুলোকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
সারাবাংলা/একে