Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্টেট অব দ্য ইউনিয়নে যা বললেন ট্রাম্প


৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১১:৩৮

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

চলতি মাসের শেষের দিকে ভিয়েতনামে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) নিজের স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন ভাষণে এই ঘোষণা দেন তিনি। খবর বিবিসির।

মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশ্যে মার্কিন কংগ্রেসে স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন (এসওটিইউ) নামে পরিচিত প্রেসিডেন্টের বার্ষিক ভাষণ দেন ট্রাম্প। এইবারের এসওটিইউ ভাষণের থিম ছিল ‘চুজিং গ্রেটনেস’ বা মহাত্ম বাছাই করা।

ভাষণে কিমের সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও, মেক্সিকো সংলগ্ন সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ, রাজনৈতিক ঐক্যতা ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

গত বছর সিঙ্গাপুরে প্রথম বৈঠক করেন কিম-ট্রাম্প

ভিয়েতনামে অনুষ্ঠিত হবে ট্রাম্প-কিম বৈঠক

ট্রাম্প বলেন, চলতি মাসের ২৭-২৮ তারিখে ভিয়েতনামে কিমের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ট্রাম্প।

গত বছর সিঙ্গাপুরে দুই নেতার মধ্যকার ঐতিহাসিক বৈঠকের পর থেকেই দ্বিতীয় একটি বৈঠক নিয়ে আলোচনা চলছিল। সিঙ্গাপুরের বৈঠকটি ছিল কোনো ক্ষমতাসীন উত্তর কোরীয় নেতা ও ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া ইতিহাসের প্রথম বৈঠক।

মঙ্গলবার রাতে ট্রাম্প বলেন, (উত্তর কোরিয়া থেকে) আমাদের জিম্মিরা দেশে ফিরে এসেছে। থেমে গেছে তাদের পারমাণবিক পরীক্ষা চালানো। গত ১৫ মাসে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপিত হয়নি।

তিনি বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত না হলে, আমার মতে, এই মুহূর্তে আমরা উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি বড় ধরণের যুদ্ধে লিপ্ত থাকতাম।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, এখনো এই বিষয়ে অনেক কিছু করা বাকি। কিন্তু কিম জং উনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক বেশ ভাল।

বিজ্ঞাপন

রাজনৈতিক ঐক্যতা নিয়ে ট্রাম্প

দুই বছর আচরণে তীব্র পাক্ষিক অবস্থানের পর মঙ্গলবার ফের একাধিকবার রাজনৈতিক ঐক্যতার আহ্বান জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। উল্লেখ্য, এর আগের দুই এসওটিইউ ভাষণেও একই আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, একসঙ্গে আমরা কয়েক দশক ধরে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়ন ভাঙতে সক্ষম। আমরা আমাদের পুরনো বিভাজন ভেঙে, পুরনো জখম আরোগ্য করে নতুন জোট গঠন করতে পারি।

ট্রাম্প তার ভাষণে একাধিক ইস্যুতে চুক্তির সম্ভাবনা তুলে ধরেন। যেমন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ঔষধের দাম কমানো ও শিশুদের মধ্যে ক্যান্সার দূরীকরণের মতো ইস্যুতে বিরোধীদলগুলোর সঙ্গে চুক্তি হতে পারে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।

মার্কিন নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ তদন্ত পরিচালনাকারী স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলার

রুশ হস্তক্ষেপ তদন্ত

এদিকে, ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে চলমান তদন্তকে ‘হাস্যকর একপাক্ষিক তদন্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প।

তিনি বলেছেন, এই তদন্ত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ঠেকিয়ে রেখেছে।

উল্লেখ্য, পূর্বে এই তদন্তটিকে ‘উইচ হান্ট’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। এই তদন্তের জের ধরে পদ হারিয়েছেন সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কমি, দোষী প্রমাণিত হয়েছে ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের উপদেষ্টা জর্জ পাপাডোপৌলস, শিবিরের সাবেক প্রধান পল ম্যানাফোর্ট, সাবেক ট্রাম্প সহযোগী রিক গ্যাটস, ট্রাম্পের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মাইক্যাল ফ্লিন, ১৩ রুশ নাগরিক, তিন রুশ প্রতিষ্ঠান ও অনেকে।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে তদন্তটি পরিচালনা করছেন স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলার ও তার টিম

মেক্সিকো সীমান্ত, ট্রাম্প, অভিবাসী, আশ্রয়দান

অবৈধ অভিবাসন ঠেকাতে মেক্সিকো সংলগ্ন সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল

সীমান্ত নিরাপত্তা

মার্কিন কংগ্রেসে নিজের বার্ষিক ভাষণে ফের মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের বিষয়ে জোর দিয়েছেন ট্রাম্প। পুনরায় যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, পূর্বে অনেক আইনপ্রণেতাই সীমান্তে এমন একটি অবরোধ নির্মাণের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।

কিন্তু আগামী সপ্তাহে আরও একটি সরকারি অচলাবস্থার আশঙ্কার মধ্যে কংগ্রেসের কাছ থেকে এমন দেয়াল নির্মাণের জন্য অর্থায়নের অনুমোদন পাওয়া ট্রাম্পের জন্য কঠিন হবে।

উল্লেখ্য, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণের জন্য ৫০০ কোটি ডলার চেয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ এই অর্থায়নের বিপক্ষে। ফলস্বরূপ, ট্রাম্প অর্থায়নের অনুমোদন পেতে সরকারি সেবা বন্ধ করে দিয়েছিলেন ডিসেম্বরে। এতে সৃষ্টি হয়েছিল মার্কিন ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি অচলাবস্থার। গত মাসে সাময়িকভাবে এক চুক্তির আওতায় তা বন্ধ হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হবে। এর মধ্যে ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাটরা নতুন চুক্তিতে না সম্মত হলে পুনরায় চালু হবে সরকারি অচলাবস্থা।

এদিকে, পূর্বে দেয়াল নির্মাণের জন্য অর্থায়ন না মিললে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে এসওটিইউ ভাষণে এ বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।

সিরিয়া, মার্কিন সেনা প্রত্যাহার, ট্রাম্প

গত বছর সিরিয়ায় মোতায়েন মার্কিন সেনাদের প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন ট্রাম্প

বিদেশে মার্কিন যুদ্ধ প্রসঙ্গ

ট্রাম্প বলেছেন, সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করার বিষয়ে অটল থাকবেন তিনি।

তিনি বলেন, দৃশ্যত সিরিয়া ও ইরাকের সকল ভূখণ্ডই এখন জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস’র দখল থেকে মুক্ত। সময় হয়েছে আমাদের সাহসী যোদ্ধাদের সিরিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার ও উষ্ণ স্বাগতম জানানোর।

এদিকে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে তিনি জানান, আফগানিস্তানে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে জঙ্গি গোষ্ঠী তালিবানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা করছে তার প্রশাসন।

তিনি বলেন, শান্তির জন্য চেষ্টা করার সময় এসেছে।

তিনি আরও জানান, মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় দুই দশক ধরে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৭ হাজার মার্কিন সেনা। ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার কোটি ডলারের বেশি।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, মহান জাতিগুলো অনন্তকালব্যাপী যুদ্ধ লড়ে না।

সারাবাংলা/ আরএ

ট্রাম্প স্টেট অফ দ্য ইউনিয়ন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর